নিউজ

Chandrayaan-3: পৃথিবী ছেড়ে চাঁদের ‘গৃহপ্রবেশ’! জেনে নিন ট্রান্সলুনার ইঞ্জেকশন আসলে কী?

সময় যতই যাচ্ছে, ততই চন্দ্রযান-৩ পৃথিবী থেকে দূরে সরে যাচ্ছে। এটি চেনা পথের সীমানা ক্রমেই ছোট করে ফেলেছে এবং অচেনা পথের দিকে এগিয়ে চলছে। ভারতের তৈরি এই মহাকাশযানটি তার বুদ্ধিমত্তা ব্যবহার করে চাঁদের দিকে এগিয়ে চলছে।

১ আগস্ট, মাঝরাতে, চন্দ্রযান-৩ পৃথিবীর কক্ষপথকে বিদায় জানিয়ে চাঁদের কক্ষপথের দিকে পাড়ি দেবে। ইসরোর বিজ্ঞানীরা খুব চিন্তিত কারণ তারা জানেন যে এই মহাকাশযানটিকে অচেনা পথের দিকে সঠিকভাবে চালাতে হবে এবং তাদের লক্ষ্য অর্জন করতে হবে।

১ আগস্ট, চন্দ্রযান-৩ পৃথিবীর বন্ধন ছেড়ে চাঁদের দিকে লাফ দেবে। ট্রান্সলুনার ইঞ্জেকশনের মাধ্যমে, চন্দ্রযান-৩কে চাঁদের কক্ষপথের দিকে একটি গুলতির মতো নিক্ষেপ করা হবে। এই পদক্ষেপটি সফল হবে কিনা তা নির্ভর করবে লক্ষ্যবস্তুতে সঠিকভাবে পৌঁছানোর উপর। লক্ষ্যচ্যুত হলে বিপদ ঘটতে পারে।

ট্রান্সলুনার ইঞ্জেকশন কী?

ট্রান্সলুনার ইঞ্জেকশন হল একটি প্রক্রিয়া যাতে চন্দ্রযান-৩কে তার গতি বৃদ্ধি করে পৃথিবীর মাধ্যাকর্ষণ শক্তিকে অতিক্রম করতে এবং চাঁদের আকর্ষণ শক্তির ক্ষেত্রটিতে প্রবেশ করতে সক্ষম করে। এই প্রক্রিয়াটি সহজ নয়।

একাধিক গণনার মাধ্যমে, বিজ্ঞানীরা পৃথিবীর শেষ কক্ষপথে থাকাকালীন ঠিক কোন জায়গা থেকে চন্দ্রযান-৩কে চালু করতে হবে তা নির্ধারণ করবেন। সামান্যতম ভুল গণনা চাঁদের মাধ্যাকর্ষণ ক্ষেত্রের পরিবর্তনকে পাশ কাটিয়ে মহাকাশে চলে যেতে পারে চন্দ্রযান-৩।

চন্দ্রযান-৩-এ একটি ল্যান্ডার মডিউল (Lander Module-LA) এবং একটি প্রোপালশান মডিউল (Propulsion Module-PM) রয়েছে। ট্রান্সলুনার ইঞ্জেকশন ১ আগস্ট সম্পন্ন হবে। এরপর ১৭ আগস্ট, ল্যান্ডার মডিউল এবং প্রোপালশান মডিউল আলাদা হয়ে যাবে।

চন্দ্রযান-৩-কে চাঁদের পৃষ্ঠে নামানোর আগে গতি কমানোর একাধিক প্রক্রিয়া শুরু হবে। আশা করা যাচ্ছে যে চন্দ্রযান-৩-এর ল্যান্ডারটি ২৩ আগস্ট চাঁদের পৃষ্ঠে অবতরণ করবে।

পৃথিবীর চারপাশে ঘুরে ঘুরে চন্দ্রযান-৩ তার কক্ষপথের আয়তন ক্রমেই বাড়িয়েছে। ২৫ জুলাই, চন্দ্রযান-৩ তার পঞ্চম কক্ষপথে উত্থিত হয়েছে। অর্থাৎ চন্দ্রযান-৩ এখনও পৃথিবীর আকর্ষণ ক্ষেত্রের মধ্যে রয়েছে, কিন্তু এটি এখনও চাঁদের কক্ষপথের দিকে এগিয়ে যাচ্ছে। ১ আগস্ট, চন্দ্রযান-৩ পৃথিবীর আকর্ষণ শক্তিকে অতিক্রম করে চাঁদের কক্ষপথে প্রবেশ করবে।

সরাসরি চাঁদে যেতে একটি মহাকাশযানের সময় লাগে প্রায় ৪ দিন। কিন্তু এক্ষেত্রে আরও শক্তিশালী রকেট এবং আরও জ্বালানি প্রয়োজন। খরচ কমাতে, চন্দ্রযান-৩-কে প্রথমে পৃথিবীর কক্ষপথে নিক্ষেপ করা হয়েছে। পৃথিবীর মাধ্যাকর্ষণ শক্তিকে কাজে লাগিয়ে চন্দ্রযান-৩ তার গতি বৃদ্ধি করেছে এবং পৃথিবীর কক্ষপথের এক একটি ধাপে পাঠানো হয়েছে। এই পদ্ধতিতে তুলনামূলক কম জ্বালানি ব্যয় হয়েছে। সেই কারণে চন্দ্রযান-৩-এর চাঁদে পৌঁছতে সময় লাগছে বেশি।

চন্দ্রযান-৩-এর সফলতা ভারতের মহাকাশ কর্মসূচির জন্য একটি বড় অর্জন হবে। এটি ভারতকে বিশ্বের প্রথম দেশগুলির মধ্যে একটি করে তুলবে যারা চাঁদে ল্যান্ডার প্রেরণ করেছে।

Back to top button