নিউজ

মেলায় কেন নেয়া হচ্ছে পার্কিং ফি! জোর তরজা শুরু গঙ্গাসাগরে

২০১১ সালে মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের ঘোষণার পর থেকে গঙ্গাসাগরে আসা পুণ্যার্থীদের কাছ থেকে তীর্থকর নেওয়া বন্ধ রয়েছে। কিন্তু সম্প্রতি কাকদ্বীপের লট নম্বর আটে অস্থায়ী পার্কিংয়ে তীর্থযাত্রীদের গাড়ি থেকে অবৈধভাবে টাকা নেওয়া হচ্ছে বলে অভিযোগ উঠেছে।

এই অভিযোগের সত্যতা যাচাই করতে রবিবার লট নম্বর আটের অস্থায়ী পার্কিংয়ে গিয়ে দেখা যায়, শাসক দলের স্বেচ্ছাসেবকরা প্রত্যেক গাড়ি পিছু টাকা আদায়ের জন্য কাকদ্বীপ পঞ্চায়েত সমিতির নামাঙ্কিত এবং স্ট্যাম্প লাগানো রসিদ তুলে দিচ্ছেন গাড়ির চালকদের হাতে।

বাইকের জন্য কুড়ি টাকা, অটোর জন্য ২৫ টাকা, ছোট গাড়ির জন্য ৭৫ টাকা এবং বড় গাড়ির জন্য ১৪০ টাকার উল্লেখ রয়েছে পঞ্চায়েত সমিতির বিলে।

পার্কিং ফি নেওয়ায় ক্ষুব্ধ পুণ্যার্থীরা। মহারাষ্ট্র থেকে আসা পুণ্যার্থী দলের গাড়ির চালক কেদারনাথ বলেন, “আগেও গঙ্গাসাগরে এসেছি। কাকদ্বীপের এই অস্থায়ী পার্কিংয়ে বাস রেখেছিলাম। কখনও পার্কিং চার্জ দিতে হয়নি। এ বার ১৪০ টাকা করে পার্কিং চার্জ নিল।”

পার্কিং ফি-এর নামে টাকা আদায় নিয়ে তদন্তের দাবি তুলেছেন সিপিএম নেতা কান্তি গঙ্গোপাধ্যায়। তিনি বলেন, “পার্কিং ফি-এর নামে টাকা আদায়ের বিষয়টি নিয়ে বিরক্ত ভিন রাজ্যের তীর্থযাত্রীরা। এ ভাবে টাকা তোলার কোনও এক্তিয়ার নেই কাকদ্বীপ পঞ্চায়েত সমিতির।”

তৃণমূল পরিচালিত কাকদ্বীপ পঞ্চায়েত সমিতির সভাপতির মদনমোহন হালদারের দাবি, “কোনও অবৈধ কাজ করা হয়নি। বৈঠক করে সবার মত নিয়েই পঞ্চায়েত সমিতির পক্ষ থেকে পার্কিং ফি নেওয়া হচ্ছে৷ বিরোধীরা এসে দেখে যাক পার্কিংয়ের টাকা সরকারি কোষাগারে জমা হচ্ছে কি না।”

দক্ষিণ ২৪ পরগনার জেলাশাসক সুমিত গুপ্তা বলেন, “গঙ্গাসাগরে আসা পুণ্যার্থীদের থেকে এক টাকাও তীর্থকর নেওয়া হচ্ছে না। গাড়ি পার্কিংয়ের চার্জ নিতেই পারে। তবে কে নিচ্ছে তা আমাকে খোঁজ নিয়ে দেখতে হবে। তীর্থকর আর গাড়ি পার্কিংয়ের চার্জ দুটো জিনিস আলাদা। দুটোকে এক করলে হবে না।”

কী বলছে আইন?

পশ্চিমবঙ্গ পঞ্চায়েত আইন ১৯৭৩-এর ২৯১(ক) ধারায় বলা হয়েছে, “পঞ্চায়েত সমিতি তার নিজস্ব এলাকার মধ্যে কোনও স্থানে পার্কিং সুবিধা প্রদানের জন্য চার্জ নির্ধারণ করতে পারে।”

তবে তীর্থকর আদায়ের কোনও আইনি ভিত্তি নেই। ২০১১ সালে মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের ঘোষণার পর থেকে গঙ্গাসাগরে তীর্থকর আদায় বন্ধ রয়েছে।

কী হবে এবার?

পার্কিং ফি-এর নামে টাকা আদায়ের অভিযোগটি গুরুতর। জেলা প্রশাসন এবং পঞ্চায়েত সমিতি উভয়েরই এই বিষয়ে তদন্ত করে ব্যবস্থা নেওয়া উচিত।

Back to top button