নিউজ

মধ্যরাতে মোদিকে ফোন! মোদীর সঙ্গে কথা বলার জন্য মিনতি ইমরানের, জেনেনিন মূল ঘটনা?

২০১৯ সালের ২৭ ফেব্রুয়ারি। ভারতীয় বায়ুসেনার উইং কমান্ডার অভিনন্দন বর্তমানের পাকিস্তানে কাটানো প্রথম রাত। আকাশপথে দুই দেশের ‘ডগফাইট’-এর পর অভিনন্দনকে বন্দি করে পাক সেনা। ঠিক দু’দিনের মাথায় ভারতের কুটনৈতিক চালের কাছে নতি স্বীকার করে উইং কমান্ডারকে মুক্ত করে পাকিস্তান।

এই ঘটনার নেপথ্যে ছিল একটি মধ্যরাতের ফোন কল। ভারতীয় হাই কমিশনার অজয় বিসারিয়া তাঁর ‘অ্যাঙ্গার ম্যানেজমেন্ট: দ্য ট্রাবলড ডিপলোম্যাটিক রিলেশনশিপ বিটউইন ইন্ডিয়া অ্যান্ড পাকিস্তান’ বইটিতে এই ঘটনার পুঙ্খানুপুঙ্খ বিবরণ দিয়েছেন।

অজয় বিসারিয়া জানান, তিনি মধ্যরাতে একটি ফোন রিসিভ করেন। কলের অপর প্রান্তে ছিলেন ভারতে নিযুক্ত পাকিস্তানি হাই কমিশনার সোহেল মেহমুদ। সে সময় তিনি ইসলামাবাদে ছিলেন। সোহেল তাঁকে জানান, ইমরান খান নরেন্দ্র মোদীর সঙ্গে কথা বলতে চাইছেন।

অজয় বিসারিয়া জানিয়েছিলেন, মোদী ব্যস্ত রয়েছেন। যদি কিছু বার্তা দেওয়ার থাকে তবে তাঁকে বলা যেতে পারে। তবে সেই রাতে আর কোনও ফোন আসেনি।

পরের দিন, ২৮ ফেব্রুয়ারি সংসদে অভিনন্দন বর্তমানের মুক্তির খবর ঘোষণা করার সময়ও মধ্যরাতে মোদীকে ফোন করার বিষয়টি উল্লেখ করেন ইমরান খান।

আন্তর্জাতিক মহল মনে করে, উইং কমান্ডারকে মুক্তি দেওয়ার সিদ্ধান্ত আদতে ভয় পেয়েই নিয়েছিল পাকিস্তান।

পাকিস্তানের তৎকালীন পররাষ্ট্র সচিব তেহমিমা জানজুয়া ২৭ ফেব্রুয়ারি আমেরিকা, ব্রিটেন ও ফ্রান্সের রাষ্ট্রদূতদের তলব করেন। বৈঠকের মাঝে বিকেল ৫টা ৪৫ মিনিটে তেহমিমা জানজুয়া সেনাবাহিনীর একটি বার্তা পড়ে শোনান। সেখানেই জানা যায়, ভারত পাকিস্তানের দিকে নয়টি ক্ষেপণাস্ত্র তাক করে মোতায়েন করে রেখেছে। সেগুলি যে কোনও সময় নিক্ষেপ করা হতে পারে।

এতেই ভয়াবহ চাপ সৃষ্টি হয় পাক সরকারের উপর। আর সেই কারণেই ইমরান খান মধ্যরাতে প্রধানমন্ত্রী মোদীর সঙ্গে ফোনে কথা বলতে উদ্যত হন।

ভারত আনুষ্ঠানিকভাবে কখনওই বলেনি অভিনন্দনের মুক্তির জন্য পাকিস্তানে ক্ষেপণাস্ত্র নিক্ষেপ করবে। কিন্তু, অজয় বিসারিয়া জানিয়েছেন, এই পরোক্ষ হুমকিতেই ভীত ও সন্ত্রস্ত হয়ে পড়ে পাক সেনা তথা প্রধানমন্ত্রী।

শেষ পর্যন্ত, ভারতের কূটনৈতিক চালের কাছে নতি স্বীকার করে উইং কমান্ডারকে মুক্তি দেয় পাকিস্তান।

এই ঘটনা ভারত-পাকিস্তান সম্পর্কের ইতিহাসে একটি গুরুত্বপূর্ণ অধ্যায়।

এটি প্রমাণ করে যে, কূটনৈতিক চালের মাধ্যমেও বড় ধরনের সমস্যার সমাধান করা সম্ভব।

Back to top button