মেরামতির কাজ চলাকালীনই ভেঙে গেল বাঁধ, সেচকর্তাকে হুমকি বিধায়কের
মুর্শিদাবাদের নবগ্রামে ব্রাহ্মণী নদীর বাঁধ ভেঙে বন্যা পরিস্থিতি সৃষ্টি হয়েছে। শনিবার রাতে বাঁধ ভেঙে জল ঢুকে পড়ে নবগ্রামের বেশ কিছু গ্রামে। গ্রামবাসীরা সারারাত ধরে বাঁধ মেরামতির চেষ্টা করেন। পরে সেচ দপ্তরের আধিকারিকরা ও ঠিকাদারের লোকজন সাহায্যের হাত বাড়িয়ে দেন।
এদিকে, বীরভূমের নলহাটি-২ ব্লকের শীতলগ্রাম পঞ্চায়েতের প্রসাদপুর ও বারুনিঘাটার এলাকায় শনিবার সন্ধ্যার দিকে ব্রাহ্মণী নদীর বাঁধ ভেঙে যাওয়ায় বন্যা পরিস্থিতি সৃষ্টি হয়। যার ফলে প্রসাদপুর, কুন্দপাড়া, কামালপুর, বারুণীঘাটা, সাহেবনগর, ছেতুনকান্দি, কৃষ্ণপুরের, বলরামপুরের মতো বেশ কিছু গ্রাম এখনও জলমগ্ন।
লাগাতার বৃষ্টির জেরে উত্তরবঙ্গের বিভিন্ন জেলায়ও বন্যা পরিস্থিতি সৃষ্টি হয়েছে। শিলিগুড়ি, ময়নাগুড়ি ও জলপাইগুড়ি শহরে বহু পাড়ায় জল জমে যায়। মালদা জেলায় গত ২৪ ঘণ্টায় ১৪৩.৯ মিলিমিটার বৃষ্টি হয়েছে, যা উত্তরবঙ্গের মধ্যে সর্বাধিক। মালদা মেডিক্যাল কলেজে জল ঢুকে যায়। জেলায় প্রচুর বাড়িও ভেঙে পড়ে।
বাঁধ ভেঙে যাওয়ার কারণ
নবগ্রামের ব্রাহ্মণী নদীর বাঁধ ভেঙে যাওয়ার কারণ নিয়ে এলাকাবাসীর মধ্যে অসন্তোষ রয়েছে। তাদের অভিযোগ, মাস তিনেক ধরেই প্রায় পাঁচ কোটি টাকা ব্যয়ে সেচ দপ্তরের পক্ষ থেকে বাঁধ মেরামতির কাজ চলছে। কিন্তু সেই কাজের মান ভালো হয়নি। যে পাশে নদী তার বিপরীত দিকে বাঁধের নীচে গাছের গুঁড়ি দিয়ে পাইলিংয়ের কাজ হলেও বালির বস্তা ফেলা হয়নি। তার ফলে বাঁধের বালি মাটি অনেকটাই দুর্বল হয়ে যায়। সেজন্য সামান্য জলের চাপেই বাঁধ ভেঙে যায়।
ক্ষয়ক্ষতির পরিমাণ
নবগ্রামে বাঁধ ভেঙে যাওয়ায় বেশ কিছু জমি প্লাবিত হয়েছে। কৃষি জমিতে ফসল নষ্ট হয়েছে। এছাড়াও, অনেক বাড়িঘর ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে। বীরভূমের নলহাটি-২ ব্লকে ব্রাহ্মণী নদীর বাঁধ ভেঙে যাওয়ায় বেশ কিছু গ্রাম জলমগ্ন হয়েছে। এতে কৃষিজমি, বাড়িঘর ও রাস্তাঘাট ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে।
প্রশাসনের পদক্ষেপ
নবগ্রামে বাঁধ ভেঙে যাওয়ার পর সেচ দপ্তরের আধিকারিকরা ও ঠিকাদারের লোকজন বাঁধ মেরামতির কাজে হাত দিয়েছেন। বীরভূমের নলহাটি-২ ব্লকে ক্ষতিগ্রস্ত এলাকায় প্রশাসন সাহায্য পাঠিয়েছে।
ব্রাহ্মণী নদীর বাঁধ ভেঙে যাওয়ায় উত্তরবঙ্গের বেশ কিছু জেলায় বন্যা পরিস্থিতি সৃষ্টি হয়েছে। এতে ব্যাপক ক্ষয়ক্ষতি হয়েছে। প্রশাসন ক্ষতিগ্রস্তদের সাহায্যে এগিয়ে এসেছে। তবে, বাঁধ ভেঙে যাওয়ার কারণ খতিয়ে দেখে পরবর্তীতে এমন ঘটনা যাতে না ঘটে সেদিকে নজর দেওয়া জরুরি।