Uncategorized

OMG! আমেরিকা থেকে থেকে এসে বাবার ‘বাদামের ঋণশোধ’ করলেন ভাইবোন

কোটি কোটি টাকা ঋণ নিয়েও তা শোধ করেননি— এমন ঘটনার কথা প্রায়ই শোনা যায়। তবে ঋণ যদি হয় কয়েক প্যাকেট বাদাম, আর সেই ঋণশোধ করতে মনে রাখেন কেউ।

অনেকেই হয়তো ভুলে যেতে পারেন। তবে ভোলেননি ভারতের অন্ধ্রপ্রদেশের দুই বাসিন্দা। কয়েক প্যাকেট বাদামের ঋণ পরিশোধ করতে ১১ বছর পর বিদেশ থেকে উড়ে এসেছেন তারা।

প্রায় ১১ বছর আগে ছেলেমেয়ের জন্য কয়েক প্যাকেট বাদাম কিনেছিলেন ভারতের অন্ধ্রপ্রদেশের এক বাসিন্দা। সে সময় দাম মেটাতে পারেননি তিনি। তবে কথা দিয়েছিলেন, পরে সে ঋণশোধ করবেন। এত বছর পর ঐ ব্যক্তির হয়ে কথা রেখেছেন তার ছেলেমেয়ে। বাবার ১১ বছর আগেকার ঋণশোধ করতে আমেরিকা থেকে দেশে ফিরে এসেছেন তারা।

সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে এ ঘটনার কথা ছড়িয়ে পড়লে অনেকেরই চোখ কপালে! এ রকমও হয়? সংবাদমাধ্যমের কাছে গোটা বিষয়টি জানিয়েছেন যুক্তরাষ্ট্র প্রবাসী ২১ বছরের নেমানি প্রণব এবং তার ছোট বোন সুচিতা।

২০১০ সালের কথা। ভারতে অন্ধ্রপ্রদেশের পূর্ব গোদাবরী জেলার কাঁকিনাড়া শহরে ইউ কোথাপল্লির সমুদ্রতটে মা-বাবার হাত ধরে বেড়াতে গিয়েছিলেন ছোট্ট প্রণব এবং সুচিতা। সে সময় প্রণবের বয়স ছিল মাত্র ১০। সমুদ্রের ধারে বেড়াতে বেড়াতে সেখানকার এক ফেরিওয়ালার কাছ থেকে কয়েক প্যাকেট বাদাম কিনেছিলেন তাদের বাবা মোহন। দাম দিয়ে গিয়ে মোহন দেখেন নিজের মানিব্যাগই বাড়িতে ফেলে এসেছেন। তখন বাচ্চাদের দিকে তাকিয়ে ফেরিওয়ালা আশ্বস্ত করে বলেন, বাদামের দাম পরে দিলেও হবে।

ফেরিওয়ালার কথা শুনে বাদাম নিয়ে বাড়ি ফিরেছিলেন মোহন। তবে ফেরার আগে ক্যামেরায় ঐ ফেরিওয়ালার ছবি তুলে নিয়ে এসেছিলেন তিনি। জেনে নিয়েছিলেন তার নাম, গিনজলা পেড্ডা সত্যাইয়া। কথা দিয়েছিলেন, পরে কোনো এক দিন বাদামের দাম মিটিয়ে দেবেন।

সেই কথা রাখতে পারেননি মোহন। কিছু দিনের মধ্যেই সপরিবার যুক্তরাষ্ট্রে চলে যান তিনি। পরে দেশে ফিরে ঐ সমুদ্রতটে গেলেও সত্যাইয়ার দেখা পাননি মোহন। ঋণশোধ করতে বন্ধুর সাহায্য চান মোহন। তার বন্ধু তৎকালীন কাঁকিনাড়া বিধানসভা আসনের বিধায়ক ডি চন্দ্রশেখর রেড্ডিইর। মোহনের কথা শুনে সত্যাইয়ার খোঁজ শুরু করেন তিনি। মোহনের কাছ থেকে সত্যাইয়ার ছবি নিয়ে তা নিজের ফেসবুক ওয়ালে পোস্ট করেছিলেন রেড্ডি। সেই সঙ্গে নিজের ব্যক্তিগত সচিব গোবিন্দরাজুলুকেও সত্যাইয়ার খোঁজ করতে বলেছিলেন।

বেশ কয়েক বছর খোঁজাখুঁজির পর অবশেষে ভার্চুয়াল দুনিয়ায় সত্যাইয়ার ছবি দেখে তার গ্রামের লোকজন গোবিন্দরাজুলুর সঙ্গে যোগাযোগ করেন। সম্প্রতি প্রণবদের সে সুখবর দেন গোবিন্দরাজুলু।

গোবিন্দরাজুলুর থেকে খবর পেয়ে তড়িঘড়ি যুক্তরাষ্ট্র থেকে দেশে ফিরে আসেন প্রণব এবং সুচিতা। ৩০ ডিসেম্বর সত্যাইয়ার সঙ্গে দেখা করতে তার গ্রামে যান তারা। জানতে পারেন, সত্যাইয়া মারা গিয়েছেন। তবে তার পরিবারের হাতে ২৫ হাজার রুপি তুলে দিয়েছেন প্রণব-সুচিতা। ১১ বছর পরে হলেও  বাদামের ‘ঋণশোধ’ হলো।

Back to top button