Uncategorized

৬ বছর আগে কামড়ানো পোকাই কাল হয়ে দাঁড়ালো, মাধ্যমিকে সর্বোচ্চ নম্বর পাওয়া ছাত্রীর

৬ বছর আগে তাকে কামড়ে ছিল এক পোকা। আর সেই পোকার কামড়ে গুরুতর অসুস্থ হয়ে পড়েছিল তরুণী। তবে তার শারীরিক অবস্থা দমিয়ে রাখতে পারেনি তার পড়াশুনা কে। ভারতের কেরালার সান্দ্রা আন জেসন নামের ওই তরুণী পরিবারের সাথেই বাস করতেন সংযুক্ত আরব আমিরশাহির শারজাতে।

স্থানীয় নিউজ চ্যানেলের প্রতিবেদন অনুযায়ী গত মাসেই শারীরিকই ভাবে অক্ষম হয়ে পরে সান্দ্রা। সান্দ্রা কেন্দ্রীয় মাধ্যমিক পরীক্ষাতে পান সর্বোচ্চ নম্বর।

২০১৪ সালে তাকে একটি পোকা কামড় দেয়। আর এরফলেই তিনি ধীরে ধীরে অসুস্থ হয়ে পড়েন। ডাক্তাররা তার স্বাস্থা পরীক্ষা করে জানতে পারে যে তিনি বিরল রোগ হেনোচ-শোনলিন পুরপুরায় (এইচএসপি) আক্রান্ত হয়েছেন। তবে কোন পোকার কামড়ে এমন রোগ হলো তা এখনও জানা যায়নি।

রক্তে ক্ষুদ্র কণিকার প্রদাহের কারণে এই রোগ ধীরে ধীরে সান্দ্রার কিডনি দুটোকে করে দেয় অকেজো।

২০১৮ সালে তার কিডনির ক্ষমতা ৭০ শতাংশই অকেজো হয়ে পড়ে। চলতি বছরের সেপ্টেম্বর মাসের শেষেই তার কিডনি প্রতিস্থাপনের কথা ছিল। আর তার চিকিৎসার জন্যই তার প্রবাসী বাবা-মা সান্দ্রা কে নিয়ে ফিরে আসেন কেরালাতে। কিন্তু পর পর দুবার কিছুক্ষনের জন্য তার হৃদযন্ত্রের কাজ বন্ধ হয়ে যায়। চলতি বছরের ৭ সেপ্টেম্বর সান্দ্রা মারা যায়। কিন্তু মারা যাবার আগে তিনি অনুপ্রাণিত করার মতো কীর্তি স্থাপন করে গিয়েছেন।

শারীরিক অসুস্থতা থাকার কারণে দ্বাদশ শ্রেণীর ক্লাসে উপস্থিত থাকতে পারেননি সান্দ্রা। এমনকি তিনি দ্বাদশ শ্রেণীর পরীক্ষাও দেন অন্য একজন লেখকের সাহায্য নিয়ে কারণ তার লেখার ক্ষমতা ছিল না। আর রেজাল্ট আসার সময় চমকে যান সকলেই তিনি শারীরিক অসুস্থতা নিয়ে পরীক্ষা দিয়েও তুলেছেন ৭৫ শতাংশ নম্বর। নিজের পছন্দের বিষয় মনো বিজ্ঞানে পেয়েছেন ৮৫ শতাংশ নম্বর। ছোটবেলায় বিমান চালক হতে চাওয়া মেয়েটি হতে চেয়েছিলেন মনোবিদ নিজের শারীরিক অবস্থার কথা খেয়াল করেই সে করেছিল তার লক্ষ পরিবর্তন। স্কুলের প্রধান শিক্ষক

শারীরিক অসুস্থতার কারণে দ্বাদশ শ্রেণির কোনো ক্লাসে অংশ নিতে পারেননি সান্দ্রা। এমনকি চূড়ান্ত পরীক্ষাও দিতে হয়েছে অন্য লেখকের সাহায্য নিয়ে। তারপরেও ৭৫ শতাংশ নম্বর তুলে তিনি কেন্দ্রীয় পরীক্ষায় সর্বোচ্চ নম্বরধারী হন। নিজের পছন্দের বিষয় মনোবিজ্ঞানে পান ৮৫ শতাংশ নম্বর। শৈশবে বিমানবালা হতে চাওয়া মেয়েটি শেষ পর্যন্ত হতে চেয়েছিলেন মনোবিদ। নিজের রোগের কারণেই তার এই লক্ষ্য পরিবর্তন বলে জানিয়েছেন স্কুলের প্রধান শিক্ষক।

শারজা ইন্ডিয়ান স্কুলের অধ্যক্ষ প্রমোদ মহাজন বলেন, ‘সান্দ্রা একজন যোদ্ধা ছিলেন। এমন অসুখে থাকা মেয়েটি শেষ পর্যন্ত লেখাপড়া চালিয়ে গিয়েছে। পরীক্ষা দেয়ার অনুমতি চেয়ে আমাকে অনুরোধ করেছিল। তখন সান্দ্রা বলেছিল, তিনি হারবেন না। তার নিজের লেখার মতো অবস্থা ছিল না। এ জন্য একজন লেখক দেয়ার অনুরোধ জানিয়েছিলেন। এ জন্য বিশেষ অনুমতি নিতে হয়েছিল। সান্দ্রা তার কথা রেখেছে। ক্লাস না করেও ৭৫ শতাংশ নম্বর অর্জন করেছে সে। আর নিজের আগ্রহের বিষয় মনোবিজ্ঞানে এই স্কোর ছিল ৮৫।

Back to top button