ঝাড়গ্রাম এবং কলকাতা – দুই শহরের বাসিন্দাদের জন্যই এল এক দারুণ সুখবর! এতদিন কলকাতায় আসার জন্য বা ঝাড়গ্রামে ফিরে যাওয়ার জন্য ট্রেনের টিকিট পাওয়া নিয়ে যে চিন্তা ছিল, এবার তার অবসান হতে চলেছে। কারণ, দক্ষিণবঙ্গ রাষ্ট্রীয় পরিবহণ সংস্থা (SBSTC) চালু করতে চলেছে ঝাড়গ্রাম থেকে কলকাতা পর্যন্ত সরাসরি এসি বাস পরিষেবা।
এই নতুন বাস পরিষেবা চালু হওয়ার ফলে ঝাড়গ্রামের মানুষজন যেমন সহজে কলকাতায় পৌঁছতে পারবেন, তেমনই কলকাতা থেকে ঝাড়গ্রাম বা তার আশেপাশে ঘুরতে যাওয়া পর্যটকদের জন্যও যাতায়াত অনেক সহজ হয়ে যাবে। আর ট্রেনের টিকিট বুকিংয়ের দীর্ঘ অপেক্ষারও আর প্রয়োজন হবে না।
পরিবহণ সংস্থা সূত্রে খবর, গত ৪ঠা এপ্রিল (শনিবার) পরীক্ষামূলকভাবে একটি এসি বাসের ট্রায়াল চালানো হয়েছে। এই বাসটি ঝাড়গ্রাম থেকে প্রতিদিন সকাল সাড়ে ছ’টায় ছাড়বে এবং মেদিনীপুর হয়ে কলকাতার ধর্মতলা পৌঁছবে। এছাড়াও, আরেকটি এসি বাস দুপুর ২টো ৪০ মিনিটে ঝাড়গ্রাম থেকে রওনা দেবে এবং লোধাশুলি হয়ে কলকাতার গড়িয়াতে গিয়ে থামবে।
কর্তৃপক্ষ আরও জানিয়েছেন, এই বাস পরিষেবা চালু হওয়ার ফলে একদিকে যেমন সাধারণ যাত্রীরা উপকৃত হবেন, তেমনই ঝাড়গ্রামের পর্যটন শিল্পেও নতুন জোয়ার আসবে। কলকাতা থেকে বহু মানুষ এবার ট্রেনে টিকিট না পেলেও সহজে ঝাড়গ্রামের প্রাকৃতিক সৌন্দর্য উপভোগ করতে পারবেন।
দক্ষিণবঙ্গ রাষ্ট্রীয় পরিবহণ সংস্থার ঝাড়গ্রাম ডিপোর ইনচার্জ এই প্রসঙ্গে বলেন, “আমরা জানি, ঝাড়গ্রাম থেকে কলকাতায় যাওয়ার জন্য ট্রেন সব সময় সঠিক সময়ে চলে না। এর ফলে যাত্রীদের অনেক ভোগান্তি হয়। বিশেষ করে জরুরি প্রয়োজনে কলকাতায় যাওয়ার জন্য দ্রুত কোনও বিকল্প পরিবহন পাওয়া যায় না।”
তিনি আরও বলেন, “যাত্রীদের এই অসুবিধা এবং পর্যটকদের কথা মাথায় রেখেই আমরা দুটি শীতাতপ নিয়ন্ত্রিত বাস চালু করার সিদ্ধান্ত নিয়েছি। তীব্র গরমের মধ্যেও যাত্রীরা আরামে যাতায়াত করতে পারবেন। আগামী সোমবার থেকে এই বাসগুলি নির্দিষ্ট সময় মেনে চলাচল করবে।”
উল্লেখ্য, দক্ষিণপূর্ব রেলের ঝাড়গ্রাম-হাওড়া শাখায় প্রায়শই ট্রেন দেরিতে চলার কারণে ঝাড়গ্রামের পর্যটন ব্যবসার উপর খারাপ প্রভাব পড়ে। তাই ঝাড়গ্রাম থেকে সকাল ও বিকেলে দুটি এসি বাস চালানোর সিদ্ধান্ত নেওয়ায় পর্যটকদের পাশাপাশি স্থানীয় ব্যবসায়ীরাও যথেষ্ট উপকৃত হবেন বলে আশা করা যাচ্ছে। এখন থেকে ঝাড়গ্রামবাসী ও পর্যটকদের কলকাতা যাতায়াতের জন্য আরও একটি আরামদায়ক বিকল্প পথ খুলে গেল।
