অফবিট

UPSC-তে ‘ভারতশ্রেষ্ঠ’ বঙ্গসন্তান! চাষীর ছেলের কীর্তিতে বাংলার মুখ হলো উজ্বল

বীরভূমের মহম্মদবাজারের কুলকুড়ি গ্রামের দেবদূত সাহা। কৃষক পরিবারের সন্তান দেবদূত ছোট থেকেই বেশ মেধাবী। আগাগোড়া লেখাপড়াই ছিল তাঁর ধ্যান-জ্ঞান। পরিবারে অনটন ছিল শুরু থেকেই। বাবা আগে জমিতে চাষের কাজ করতেন, এখন সেটাও করেন না। বছর তিনেক আগে পর্যন্তও সংসার চলত ঠাকুমার অল্প কিছু পেনশনের টাকাতেই। তবে ২০২০ সাল থেকে পরিস্থিতি বদলাতে শুরু করে। ওই বছরেই পোস্ট অফিসে চাকরি পেয়ে যান এই কৃতী ছাত্র। গ্রামীণ পোস্ট অফিসে পোস্ট মাস্টারের চাকরি পেলেও সর্বভারতীয়স্তরের পরীক্ষায় বসার অদম্য ইচ্ছেটা ফুরিয়ে যায়নি দেবদূতের।

২০২১ সালের মাঝামাঝি সময় থেকে UPSC-এর প্রস্তুতি নেওয়া শুরু করেন দেবদূত। ২০২২ সালে প্রথমবার পরীক্ষায় বসেন। প্রথমবার লেখা পরীক্ষায় পাশ করে ইন্টারভিউ দিলেও সেবার সুযোগ পাননি। তবে দ্বিতীয়বারের পরীক্ষায় সুযোগ পেয়ে যান। UPSC-এর ইন্ডিয়ান স্ট্যাটিসটিক্যাল সার্ভিস পরীক্ষায় গোটা দেশের ৩৩ জন কৃতীর তালিকায় নাম রয়েছে দেবদূত সাহারও।

চাকরির মধ্যেই সময় বাঁচিয়ে পড়াশোনা করতেন দেবদূত। ছুটির দিন বা অন্য অবসর সময়ে পড়তেন। ২০২০ সালে পোস্ট অফিসে চাকরি পেয়েছেন। বাবা বর্তমানে বাড়িতেই থাকেন। আগে তিনি চাষের কাজ করতেন।

আকাশছোঁয়া এই সাফল্য পেয়ে দেবদূত নিজেও উচ্ছ্বসিত। আগামী দিনে নিজের গ্রামের জন্যও বেশ কিছু কাজ করার ইচ্ছে মনে পুষে রেখেছেন তিনি।

দেবদূতের সাফল্যের রহস্য

দেবদূতের সাফল্যের রহস্য কী? এই প্রশ্নের উত্তর দেবদূত নিজেই দিয়েছেন। তাঁর কথায়, “আমি সবসময়ই পড়াশোনায় মনোযোগী ছিলাম। আমার বাবা-মায়েরও খুব সমর্থন ছিল। তারা আমাকে পড়াশোনায় উৎসাহিত করতেন। চাকরির ফাঁকেই সময় বাঁচিয়ে পড়াশোনা করতাম। ছুটির দিন বা অন্য অবসর সময়ে পড়তাম। এছাড়াও, আমি বিভিন্ন টিউটোরিয়াল এবং অনলাইন কোর্সের সাহায্য নিয়েছি। নিয়মিত অনুশীলন করেছি। ধৈর্য ধরে পড়াশোনা করেছি। সবশেষে, আমার সাফল্য এসেছে।”

দেবদূতের সাফল্যের অনুপ্রেরণা

দেবদূতের সাফল্য নিঃসন্দেহে সকলের জন্য অনুপ্রেরণা। তাঁর সাফল্য প্রমাণ করে যে, কঠিন পরিশ্রম এবং অধ্যবসায়ের মাধ্যমে যেকোনো বাধা অতিক্রম করা সম্ভব। দেবদূতের সাফল্য থেকে আমরা শিক্ষা নিতে পারি যে, কোনও লক্ষ্য অর্জনের জন্য কখনই হাল ছাড়তে নেই।

দেবদূতের ভবিষ্যত পরিকল্পনা

দেবদূত তাঁর ভবিষ্যত পরিকল্পনা সম্পর্কে বলেন, “আমি এখন UPSC-এর ট্রেনিং নিচ্ছি। ট্রেনিং শেষ হলেই আমি আমার দায়িত্ব পালন শুরু করব। আমি একজন ভালো কর্মকর্তা হতে চাই। দেশের জন্য কিছু করতে চাই। এছাড়াও, আমি আমার গ্রামের জন্য কিছু কাজ করার পরিকল্পনা করছি। গ্রামের মানুষের উন্নয়নে অবদান রাখতে চাই।”

দেবদূতের সাফল্য সকলের জন্য অনুপ্রেরণা। তাঁর সাফল্য প্রমাণ করে যে, কঠিন পরিশ্রম এবং অধ্যবসায়ের মাধ্যমে যেকোনো বাধা অতিক্রম করা সম্ভব।

Back to top button