লাইফস্টাইল

মন খারাপের চিকিৎসা করতে হলে এই ৮টি খাবার খান

যখন আমাদের মন খারাপ মাত্রা ছড়ায় যায়,তখন মস্তিষ্কের ভেতরে ট্রান্সলোকেটার প্রোটিনের মাত্রা বৃদ্ধি পেতে শুরু করে, যা প্রমাণ করে যে ডিপ্রেশনের সঙ্গে ইনফ্লেমেশন বেড়ে যাওয়ার গভীর যোগ রয়েছে। সে জন্য এই লেখায় আলোচিত খাবারগুলোকে প্রতিদিনের খাদ্য তালিকায় অন্তর্ভুক্ত করতে হবে।এই ৮টি খাবার বিশেষ ভূমিকা পালন করে,সেগুলি হলো-

১.মাছ
মাছ আমাদের নিত্য দিনের খাবারের সঙ্গী। আমাদের খাবারের দ্বিতীয় তালিকাতে আছে মাছ। আমাদেরকে বলা হয় মাছে ভাতে বাঙ্গালী। কিন্তু আমরা তো প্রতিদিন একই জাতের মাছ খায় না। বিভিন্ন জাতের মাছ ভাতের সাথে খেয়ে থাকি। মাছে থাকা ওমেগা থ্রি ফ্যাটি অ্যাসিড, ভিটামিন বি, বি৬ এবং বি১২ এক্ষেত্রে বিশেষ ভূমিকা পালন করে থাকে।

২.টমেটো
যদিও টমেটোতে প্রাকৃতিক শর্করা থাকে, তবে তা স্বল্প ‘গ্লাইসেমিক ইন্ডেক্স’ সমৃদ্ধ। এর অর্থ হল এটা রক্তের শর্করা বাড়াতে কোনো প্রভাব রাখে না। ফলে ইনসুলিন নিঃসরণ করে না। এতে থাকা লাইকোপেন নামক এক ধরনের অ্যান্টিঅক্সিডেন্ট শরীরে প্রবেশ করার পর মন খারাপকে সমূলে উৎখাত করতে বিশেষ ভূমিকা পালন করে থাকে। ফলে মানসিক অবসাদের মতো ভয়ঙ্কর পরিস্থিতি থেকে বেরিয়ে আসতে সময় লাগে না।

৩.পালং শাক
বাঙালির প্রিয় এই শাকটি নিয়মিত খাওয়া শুরু করলে শরীরে আয়রন, এবং ফলিক অ্যাসিডের মাত্রা বাড়তে শুরু করে। যার প্রভাবে মস্তিষ্কের ভেতরে স্ট্রেস হরমোনের ক্ষরণ কমে। ফলে পরিস্থিতির উন্নতি ঘটতে শুরু করে। সেই সঙ্গে সার্বিকভাবে শারীরিক ক্ষমতাও বৃদ্ধি পায়।

৪.ভিটামিন ডি
বেশ কিছু গবেষণায় দেখা গেছে শরীরে এই বিশেষ ধরনের ভিটামিনটির ঘাটতি দেখা দিলে মুড সুইং এবং ডিপ্রেশনের মতো সমস্যা মাথা চাড়া দিয়ে ওঠার আশঙ্কা বৃদ্ধি পায়। এই কারণেই তো নিয়মিত কিছু সময় গায়ে রোদ লাগানোর পরামর্শ দিয়ে থাকেন চিকিৎসকেরা। কারণ সূর্যের আলো গায়ে লাগলে দেহের ভেতরে ভিটামিন ডি-এর ঘাটতি দূর হতে সময় লাগে না।

৫.নারকেল
নারিকেল দিয়ে কতো না মজার খাবার তৈরি হয়। অনেকের কাছে নারিকেলের শাঁস খুবই প্রিয় একটি খাবার। নারিকেলের জল , নারিকেলের দুধ ও নারিকেলের তেল পুষ্টিগুণে ভরপুর এক উৎকৃষ্ট খাবার। নারিকেলের শাঁসে রয়েছে কার্বোহাইড্রেট, চর্বি, প্রোটিন, ভিটামিন বি১,বি২, বি৩, বি৫, বি৬,বি৯, ভিটামিন সি ইত্যাদি। একাধিক গবেষণায় দেখা গেছে নারকেলে থাকা বেশ কিছু উপকারি ফ্যাট শরীরে প্রবেশ করার পর মস্তিষ্কের ভেতরে ফিল গুড হরমোনের ক্ষরণ বাড়িয়ে দেয়।

৬.বাদাম
সুস্বাস্থ্যের জন্য বাদাম উপকারী. এক মুঠো বাদামে দুইশ ক্যালোরি পাওয়া যায়। বাদামে যে ধরনের চর্বি পাওয়া পাওয়া যায়,তা স্বাস্থ্যের জন্য খুবই ভাল । দৈনিক এক মুঠো বাদাম শরীরে HDL কোলেস্টেরল বাড়ায় যা স্বাস্থ্যকর। বাদাম এত স্বাস্থ্যকর হওয়ার কারন এতে রয়েছে ভিটামিন,খনিজ,আঁশ ,মনস্যাচুরেটেড ও পলিস্যাচুরেটেড চর্বি আর ওমেগা-৩ ফ্যাটি অ্যাসিড প্রভৃতি। এতে রয়েছে প্রচুর মাত্রায় ভিটামিন বি২, ভিটামিন ই, ম্যাগনেসিয়াম এবং জিঙ্ক।

৭.রসুন
কেবল খাবার হিসেবে নয়, বহুকাল আগে থেকে রসুন ওষুধ হিসেবে ব্যবহৃত হয়ে আসছে। বিশ্বের প্রায় প্রতিটি জাতিই রসুনকে বিভিন্ন অসুখ থেকে নিরাময়ের জন্য ব্যবহার করে আসছে। এতে থাকা অ্যান্টিঅক্সিডেন্ট শরীরের ভেতরে অক্সিডেটিভ স্ট্রেসের মাত্রা কমানোর মধ্য দিয়ে স্ট্রেস এবং অ্যাংজাইটি কমাতে বিশেষ ভূমিকা পালন করে থাকে। শুধু তাই নয়, ছোট থেকেই নিয়মিত রসুন খাওয়ার অভ্যাস করলে হার্টের কর্মক্ষমতা যেমন বৃদ্ধি পায়, তেমনি ডায়াবেটিসের মতো রোগে আক্রান্ত হওয়ার আশঙ্কাও কমে।

৮.কমপ্লেক্স কার্বোহাইড্রেট
কমপ্লেক্স কার্বোহাইড্রেট যুক্ত খাবার রক্তে শর্করা বেশি বৃদ্ধি করে। স্বাস্থ্য বিজ্ঞানীদের মতে ফ্যাট জাতীয় খাদ্যে যেমন ভালো-মন্দ রয়েছে শর্করা জাতীয় খাবারের মধ্যেও তেমনি ভালো শর্করা মন্দ শর্করা রয়েছে। নিয়মিত ব্রাউন রাইস বা পূর্ণ শস্য জাতীয় খাবার খেলে শরীরে কমপ্লেক্স কার্বোহাইড্রেটের মাত্রা বৃদ্ধি পায়, যা নার্ভাসনেস, অ্যাংজাইটি এবং ইনসমনিয়ার মতো সমস্যা কমাতে বিশেষ ভূমিকা পালন করে থাকে।

Back to top button