অফবিট

বিশেষ: দুর্দান্ত ভাবে শুরু হলেও কেন দাঁড়াতে পারল না এফএম রেডিও?

বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রাক্তন শিক্ষার্থী হারাধন রায় এখন বড় একটা সময় ফেসবুকে পড়ে থাকেন। অথচ ২০১৪ সালের মাঝামাঝিতেও তাঁর আসক্তি ছিল অন্যদিকে, এফএম রেডিওতে।

হারাধন রায় বলেন, ‘আগে ফিচার ফোন ছিল। তখন সারাক্ষণ এফএম রেডিও চালিয়ে রাখতাম। এখন গান শুনতে মন চাইলে ইউটিউবে চলে যাই। যতদিন স্মার্টফোন ছিল না, ততদিন শুনতাম এফএম রেডিও।’

বিশ্ববিদ্যালয়ে পড়াকালীন চতুর্থ বর্ষে উঠে স্মার্টফোন কেনেন হারাধন রায়। তখন থেকেই এফএম (ফ্রিকোয়েন্সি মডিউল) রেডিওতে আসক্তি কমতে থাকে তাঁর। দেশে এফএম রেডিওর প্রতি আসক্তি কমেছে হারাধনের মতো আরও অনেকের।

দেশে এফএম রেডিওর জনপ্রিয়তা দ্রুত কমার কারণ অনেক। বৈচিত্র্য নয় বরং অন্যের জনপ্রিয় অনুষ্ঠান অনুকরণ, শুধু গান প্রচারের ওপর নির্ভরতা, বিজ্ঞাপনী সংস্থার মনমতো অনুষ্ঠান প্রচার, তরুণ প্রজন্মের রেডিও জকিদের (আরজে) মানের চেয়ে খ্যাতির দিকে বেশি নজর দেওয়া, বিজ্ঞাপন দ্রুত কমে যাওয়া, মূলত এগুলোকেই জনপ্রিয়তা কমার কারণ হিসেবে চিহ্নিত করেছেন এ খাতের সংশ্লিষ্ট ব্যক্তিরা।

পাশাপাশি অন্যান্য গণমাধ্যমও ঝুঁকছে অনলাইন ও সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমের দিকে। ফলে অডিও মাধ্যম এফএম রেডিও মার খাচ্ছে। সম্প্রচার খাত হিসেবে শক্তভাবে না দাঁড়ানোয় এফএম রেডিও ছেড়ে অনেকে চলে যাচ্ছেন অন্য পেশায়। এমনকি সুপরিচিত কয়েকজন আরজে রেডিও অনুষ্ঠানের চেয়ে ঝুঁকছেন সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে; নিজস্ব অনুষ্ঠানের ওপরে।

অথচ অনেক উন্নত দেশে রেডিও বেশ জনপ্রিয়। এমন অবস্থাতেই আজ ১৩ ফেব্রুয়ারি পালিত হচ্ছে বিশ্ব রেডিও দিবস। জাতিসংঘ ঘোষিত দিবসটি পালিত হয়ে আসছে ২০১২ সাল থেকে।

এখন অনলাইন ও সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমের ওপর গুরুত্ব দেওয়া হলেও সেগুলোর জন্য খুব ভালো কনটেন্ট বা অনুষ্ঠান এফএম রেডিওতে নজরে আসে না; বরং শুরুর দিকে এফএম রেডিওর কিছু অনুষ্ঠান বেশ জনপ্রিয় ছিল, যেমন ‘ভূত এফএম’, ‘লাভ গুরু’, ‘ট্রাফিক আপডেট’। হৃদয়গ্রাহী মানবিক কিছু অনুষ্ঠানও জনপ্রিয়তা পেয়েছিল। পরবর্তী সময়ে অনেকেই এগুলোর অনুকরণ শুরু করে। এ কারণেও শ্রোতাদের আস্থা কমতে থাকে বলে মত সংশ্লিষ্ট ব্যক্তিদের।

মূলত ব্যবসায়িক কারণেই বন্ধ হয়ে যায় এক সময়ের জনপ্রিয় এফএম প্রচার। এখন দেশে হাতে গোনা যাবে এমন এফএম চ্যানেল সক্রিয়। যুগের পরিবর্তনে কমে যাচ্ছে তাদের জনপ্রিয়তাও।

Back to top button