বিনোদন

কেন বার বার ক্ষেপণাস্ত্র পরীক্ষা চালাচ্ছেন কিম জং উন? জেনেনিন সেই গোপন কারণ

চলতি জানুয়ারি মাসে উত্তর কোরিয়া সাতবার ক্ষেপণাস্ত্রের পরীক্ষা করেছে। ২০১৯ সালের পর থেকে দেশটি আর কখনোই এক মাসে এতবার পরীক্ষা চালায়নি। এরকম ঘন ঘন ক্ষেপণাস্ত্র পরীক্ষা চালানোর বিষয়টি অস্বাভাবিক। গবেষণা প্রতিষ্ঠান ‘কার্নেগি এনডাউমেন্ট ফর ইন্টারন্যাশনাল পিস’ এর বিশেষজ্ঞ অঙ্কিত পান্ডা বলেন, উত্তর কোরিয়া সাধারণত ক্ষেপণাস্ত্র হামলার সক্ষমতা বাড়াতে এবং অপারেশনাল প্রস্তুতি বজায় রাখার জন্য এ ধরনের পরীক্ষা চালিয়ে থাকে।

সর্বশেষ পরীক্ষাগুলোও এটাই প্রমাণ করেছে।

অঙ্কিত পান্ডা বলেন, একই সময়ে উত্তর কোরিয়া অর্থনৈতিক সংকটেও রয়েছে। তাই এই সময়েও পরীক্ষা না কমিয়ে বরং বাড়ানোর মধ্য দিয়ে কিম জং-উন হয়তো এই বার্তাও দিতে চান, যত অসুবিধায়ই থাকুন না কেন, জাতীয় প্রতিরক্ষা অগ্রাধিকারগুলো থেকে বিচ্যুত হবেন না তারা।

উত্তর কোরিয়ায় বরাবরই খাদ্য ঘাটতি রয়েছে। পাশাপাশি দেশটির অর্থনৈতিক অবস্থাও নড়বড়ে। কভিড সংক্রমণ মোকাবিলায় স্ব-আরোপিত অবরোধও এই অর্থনৈতিক সংকটের জন্য দায়ী। উত্তর কোরিয়া তার প্রধান মিত্র চীনের সঙ্গেও সাময়িকভাবে বাণিজ্য বন্ধ রেখেছে।

উত্তর কোরিয়ার নেতা কিম জং-উন সম্প্রতি স্বীকার করেছেন, তার দেশ এক ‘মহা জীবন-মরণ লড়াইয়ের’ মুখোমুখি হচ্ছে। এরপরও তিনি হাইপারসনিক (শব্দের চেয়েও দ্রুতগতি) ক্ষেপণাস্ত্র তৈরিসহ সামরিক শক্তি বাড়ানোর প্রত্যয় উচ্চারণ করেছেন।

যুক্তরাষ্ট্রের প্রেসিডেন্ট জো বাইডেন দায়িত্ব নেওয়ার পর উত্তর কোরিয়াকে পারমাণবিক অস্ত্র কর্মসূচি থেকে বিরত রাখার বিষয়ে আলোচনার উদ্যোগও স্থবির হয়ে পড়ে। চলতি মাসে আগের কয়েকটি ক্ষেপণাস্ত্র পরীক্ষার প্রতিক্রিয়ায় বাইডেন প্রশাসন গত সপ্তাহে উত্তর কোরিয়ার ওপর প্রথম নিষেধাজ্ঞা আরোপ করে।

এরপরই গত সোমবার ক্ষেপণাস্ত্র উৎক্ষেপণ করে উত্তর কোরিয়া। ওই নিষেধাজ্ঞা আরোপের ‘শক্তিশালী প্রতিক্রিয়া’ জানাতেই সোমবারের উৎক্ষেপণটি করা হয়ে থাকতে পারে বলে উল্লেখ করেন ইউহা উইমেনস ইউনিভার্সিটির উত্তর কোরিয়া স্টাডিজের অধ্যাপক পার্ক ওন-গন। তিনি বলেন, উত্তর কোরিয়া হয়তো দেখাতে চাইছে যুক্তরাষ্ট্রের সঙ্গে গায়ের জোরে হার মানার কোনো ইচ্ছা তাদের নেই।

পরীক্ষা কি চীনের কারণে?

চীনে শীতকালীন অলিম্পিক শুরু হওয়ার প্রাক্কালে ক্ষেপণাস্ত্র উৎক্ষেপণগুলো করা হয়েছে। এই শীতকালীন অলিম্পিক চীনের জন্য অত্যন্ত মর্যাদাপূর্ণ ও রাজনৈতিকভাবে সংবেদনশীল আয়োজন। আগামী ৪ ফেব্র–য়ারি বেইজিংয়ে এটি শুরু হওয়ার কথা।
উত্তর কোরিয়া বিষয়ক বিশ্লেষক চাদ ও’ক্যারল টুইটারে বলেছেন, ‘আমি মনে করি, বেইজিং অলিম্পিক শুরু হওয়ার প্রাক্কালে উত্তর কোরিয়ার এসব পরীক্ষাকে স্বাগত জানাবে না চীন। এরপরও যদি এ ধরনের উৎক্ষেপণ অব্যাহত থাকে, তবে কোনো কারণবশত উত্তর কোরিয়া চীনের ওপর বিরক্ত-এমন সম্ভাবনা আমাদের বাদ দেওয়া উচিত নয়। ’

আরেক উত্তর কোরিয়া বিশেষজ্ঞ লেইফ-এরিক ইজলি বলেন, গণমাধ্যমের সাম্প্রতিক খবরে বলা হয়েছে, উত্তর কোরিয়া শিগগিরই আবার চীনের সঙ্গে বাণিজ্য শুরু করতে পারে। এই সময়ে এসে ক্ষেপণাস্ত্র পরীক্ষা চালানোর বিষয়ে এই ধারণাও করা যায় যে, বেইজিং পিয়ংইয়ংয়ের এই উসকানির সঙ্গে জড়িত। চীন হয়তো উত্তর কোরিয়াকে অর্থনৈতিকভাবে সহায়তা দেওয়ার পাশাপাশি সামরিক বিষয়ও সমন্বয় করছে। সূত্র: বিবিসি

Back to top button