জীবনে অনেককে হারিয়েছি, স্পষ্টবাদী মেয়েদের কেউ পছন্দ করে না : মিমি চক্রবর্তী
টলিউডের জনপ্রিয় অভিনেত্রী মিমি চক্রবর্তী। ব্যক্তিজীবনে স্পষ্টবাদী ও সাহসী হিসেবে বেশ সুনাম রয়েছে তার। তবে এই নায়িকা জানালেন, সবসময় সত্যি বলায় জীবনে অনেককে হারিয়েছেন তিনি।
সম্প্রতি আনন্দবাজারকে দেওয়া এক সাক্ষাৎকারে মিমিকে প্রশ্ন করা হয়, ‘যাহা বলিব সত্য বলিব’— এমন শর্ত রাখা হলে কতটা বিপদে পড়তেন? এর জবাবে অভিনেত্রী বলেন, ‘আমার কোনো অসুবিধা হতো না। আমি তো সত্যিটাই বলতে চাই সবসময়। সে কারণে এত লোকের চক্ষুশূল হই যে, অধিকাংশ সময় বিপদে পরে যাই। আমাকে লোকে বলে, ‘‘মিমি, তুমি এবার একটু সত্যি কথা বলা বন্ধ কর। সবদিক বাঁচিয়ে বুঝেশুনে কথা বলতে শিখো।’’ সেটাই আমি করতে পারি না।’
সত্যি বলে কখনও বড় বিপদে পড়েছেন কিনা এমন প্রশ্নে মিমি বলেন, ‘আমি সত্যি বলে জীবনে কত বন্ধু হারিয়েছি, তার কোনও হিসেব নেই। আসলে তারা সকলেই তেল মারায় অভ্যস্ত। তাই সত্যি বলায় তাদের শত্রু হয়ে গিয়েছিলাম।’
বন্ধুর সংখ্যা কমে যাওয়ায় কোনো আফসোস হয় কি না, মিমির স্পষ্ট জবাব— একদমই না। এটাই অনেক ভাল। যারা সত্যি কথা বললে চলে যায়, তারা তো কখনোই আমার বন্ধু ছিল না। যারা থেকে গেছে, তারা সারা জীবন থাকবে। অনেকেই মুখে বলবে, আমায় কিন্তু সব সত্যি বলবি। কিন্তু যখন বললাম, তখন তারা আর নিতে পারে না। তাদের আমার প্রয়োজন নেই। বন্ধুরা তো সাফল্যে খুশি হবে, বাহবা দেবে। যদি ঈর্ষা করে, তাহলে আর কিসের বন্ধু! আমার জীবনে খুব কম মানুষ রয়েছে, যারা আমাকে নিয়ে গর্বিত। কিন্তু এই বন্ধুরা আছে বলে আমিও খুব গর্বিত।
এই অভিনেত্রী বলেন, ‘আমি বরাবরই নিজের কাজ দিয়ে কথা বলতে পছন্দ করি। নিজের ইচ্ছেতেই কম সিনেমায় কাজ করি। আর বাংলা ছবির টাকায় তো আমার সংসার চলে না। আমার তো ইন্ডাস্ট্রিতে কোনো গডফাদার নেই যে খরচ চালাবে। আমাকে মা-বাবাকে দেখতে হয়, আমার পোষা প্রাণীদের দেখতে হয়, পাঁচটা স্বেচ্ছাসেবী সংগঠন চালাতে হয়, নিজের খেয়াল রাখতে হয়। তাই পরিকল্পনা করেই কাজ করতে হয়।’
মিমি বলেন, ‘দুটি জিনিস আমার জন্য খুব জরুরি। এক, ভালো গল্প। দুই, টাকা। যদি গল্প ভালো হয় তাহলে টাকায় আপস করতে রাজি আছি, আর যদি গল্প খারাপ হয় আবার পারিশ্রমিকও কম হয়, তাহলে কেন সেই কাজ করব? এক্ষেত্রে আমি অনেক কাজে ‘না’ বলি। যেটা অনেকেই পছন্দ করেন না। আসলে স্পষ্টবাদীয় মেয়েদের অনেকের অপছন্দের পাত্রী হতে হয়। সবাই ধরে নেয়, একটা গল্পের প্রস্তাব এলেই সঙ্গে সঙ্গে রাজি হয়ে যেতে হবে। আমি আবার সকলের সঙ্গে কাজ করতেও স্বাচ্ছন্দ্য বোধ করি না। আমি শুধু তাদের সঙ্গেই কাজ করি, যারা আমার কাজ এবং শৃঙ্খলার মূল্য বোঝেন।