রাজ্য

পুরভোটে সবুজ ঝড়, ১০৮-এ তৃণমূল ১০২ বামেরা ১, নিশ্চিহ্ন বিজেপি

আজ, বুধবার সকাল ৮টার পর থেকেই ১০৮টি পুরসভায় গণনা শুরু হয়। প্রথম থেকেই ঝড় তোলে তৃণমূল কংগ্রেস। লাগাতার পিছিয়ে পড়তে থাকে বিরোধীরা। গণনার পর বেশ খানিকটা সময় পেরিয়ে যাওয়ার পরও অধিকাংশ জায়গায় খাতা খুলতেই পারেনি গেরুয়া শিবির। কার্যত বিজেপির নেতা-কর্মীদের ‘তর্জন-গর্জন’ই সার। কোনও পুরসভাতেই চমক দেখাতে পারেনি তারা। ডাহা ফেল করেছে মোদি ম্যাজিক। দলের ঝুলি শূন্য। একাধিক জায়গা প্রার্থীদের জামানতও জপ্ত হয়েছে বলে শোনা যাচ্ছে। কাজেই মোটামুটি সকালের দিকেই এদিনের ফলাফল স্পষ্ট হয়ে যায়। প্রত্যাশা মতোই দুপুরের দিকে অধিকাংশ পুরসভাই দখল করে নেয় ঘাসফুল। সেঞ্চুরি পার হয়ে যায়। ১০৮-র মধ্যে ১০২টি পুরসভায় দুর্দান্ত ভাবে জয়লাভ করে তৃণমূল। তারমধ্যে ৩১টি পুরসভা আবার বিরোধী শূন্য। ইতিমধ্যেই ওয়ার্ডে ওয়ার্ডে শুরু হয়েছে জয়ের উল্লাস।
কাঁথিতে ভেঙে পড়েছে অধিকারী গড়। দুপুরের পরই শান্তিকুঞ্জের সামনে উড়ছে সবুজ আবির। এদিন সকাল থেকে বাড়ির বাইরে বের হয়নি অধিকারী অ্যান্ড কোং। হারের পর কোনও সাংবাদিকদের দেননি প্রতিক্রিয়াও। বিজেপি নেতা দিলীপে ঘোষেরও মুখরক্ষা হয়নি। পশ্চিম মেদিনীপুরের গেরুয়া দুর্গ কার্যত ধুলিস্যাৎ হয়ে গিয়েছে। ২০টি আসন তৃণমূলের দখলে, তিনটি বাম, একটি নির্দল ও একটি কংগ্রেসের দখলে। খোদ দিলীপবাবুর জায়গাতেই একটিও আসন পায়নি বিজেপি। কাজেই নিরঙ্কুশ সংখ্যাগরিষ্ঠতা নিয়ে বোর্ড দখলের পথে তৃণমূল। একই দৃশ্য ভাটপাড়া পুরসভারও। ৩৫ ওয়ার্ডের মধ্যে ৩৪টি ওয়ার্ডেই জয়ী হয়েছে তৃণমূল। একটি ওয়ার্ডে সিপিএম প্রার্থীর মৃত্যু হওয়ায় ভোট হয়নি। কাজেই পুরভোটে অর্জুন সিংয়ের সক্রিয়তা নিয়ে প্রশ্ন উঠে গিয়েছে গেরুয়া শিবিরের অন্দরে। ধস নেমেছে অধীর চৌধুরীর গড়েও। তিন দশক পর বহরমপুর পুরসভা হাতছাড়া হয়েছে কংগ্রেসের। মুর্শিদাবাদ পুরসভায় ১৬ আসনের মধ্যে ৯টিতে জিতেছে তৃণমূল, ৬টিতে বিজেপি ও একটিতে নির্দল জয়লাভ করেছে।

বামেদের দখলে এসেছে তাহেরপুর পুরসভা। মোট ১৩টি আসনের মধ্যে ৮টিতেই জয়ী সিপিএম। বাকি ৫টিতে জয়ী হয়েছে তৃণমূল। আশ্চর্যজনকভবেই অন্যান্যদের ঝুলিতেও এসেছে একটি পুরসভা। একাধিক সভা করার পরও দার্জিলিং হাতছাড়া হয়েছে তৃণমূল, বিজেপির। বরং মাত্র ছয় মাস আগে অজয় এডওয়ার্ডের নেতৃত্বে গঠিত হওয়া হামরো পার্টি দার্জিলিং পুরসভা দখল করল। পাহাড়ের ফলাফল হামরো পার্টি ১৮, ভারতীয় গোর্খা প্রজাতান্ত্রিক মোর্চা ৮, গোর্খা জনমুক্তি মোর্চা ৪ এবং তৃণমূল কংগ্রেস পেয়েছে ২টি আসন। পুরভোটের এই ফল থেকেই বেশ খানিকটা স্পষ্ট হল যে পাহাড়ের রাজনীতির সমীকরণ ফের অন্য কথা বলেছে। অন্তত রাজনৈতিক মহলের তেমনটাই ধারণা। বাকী চারটি পুরসভা ত্রিশঙ্কু। সেগুলি হল-ঝালদা, বেলডাঙা, এগরা এবং চাঁপদানি পুরসভা।
পুরভোটে বিপুল জয়ের পরই দুপুরের দিকে টুইট করেন রাজ্যের মুখ্যমন্ত্রী তথা দলীয় সুপ্রিমো মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। লেখেন, মা, মাটি, মানুষকে আন্তরিক কৃতজ্ঞতা। জয়ী প্রার্থীদের সকলকে অভিনন্দন জানাই। আমাদের দায়িত্ব, দায়বদ্ধতা আরও বেড়ে গেল। আসুন সবাই মিলে উন্নয়নের লক্ষ্যে কাজ করি।

Back to top button