
আয়কর অফিসার পরিচয়ে এক নির্মাণ ব্যবসায়ীর বাড়িতে লুটপাটের অভিযোগে কলকাতায় ৫ জন সিআইএসএফ (কেন্দ্রীয় শিল্প নিরাপত্তা বাহিনী) কর্মীকে গ্রেফতার করেছে পুলিশ। গ্রেফতারকৃতদের মধ্যে রয়েছেন একজন ইন্সপেক্টর, একজন হেড কনস্টেবল এবং একজন মহিলা কনস্টেবল। অভিযোগ, মধ্যরাতে ভুয়ো পরিচয়ে তারা ওই বাড়ি থেকে ৩ লক্ষ টাকা নগদ এবং ২০-২৫ ভরি সোনার গয়না লুট করেছে।
ঘটনার বিবরণ
পুলিশ সূত্রে জানা গেছে, গত ১৭ মার্চ মধ্যরাতে চিনার পার্ক এলাকায় এক মৃত প্রোমোটারের বাড়িতে আয়কর অফিসার সেজে কয়েকজন ব্যক্তি হাজির হয়। তারা দরজায় বেল বাজিয়ে ভেতরে প্রবেশ করে এবং বাড়ির সদস্যদের মোবাইল ফোন কেড়ে নেয়। এরপর তারা প্রোমোটারের মায়ের ঘরে ঢুকে তল্লাশির নামে লুটপাট শুরু করে। অভিযোগ, তারা নগদ ৩ লক্ষ টাকা এবং সোনার গয়না লুট করে। এছাড়া প্রোমোটারের সৎমায়ের কাছ থেকে জোর করে কাগজে সই করিয়ে নেয় তারা।
অভিযোগ ও তদন্ত
ঘটনার পর মৃত প্রোমোটারের মেয়ে বাগুইআটি থানায় গিয়ে অভিযোগ দায়ের করেন। তদন্তে নেমে পুলিশ প্রথমে ভুয়ো আধিকারিকদের ব্যবহৃত গাড়ি শনাক্ত করে। একজনকে আটক করে জিজ্ঞাসাবাদের পর বাকি সন্দেহভাজনদের সম্পর্কে তথ্য পায় পুলিশ। এরপর পাঁচজন সিআইএসএফ কর্মীকে গ্রেফতার করা হয়। এছাড়া ঘটনায় জড়িত থাকার অভিযোগে প্রোমোটারের দ্বিতীয় পক্ষের স্ত্রী এবং গাড়ির চালককেও গ্রেফতার করা হয়েছে।
পুলিশের বক্তব্য
পুলিশ জানিয়েছে, গ্রেফতারকৃতদের জিজ্ঞাসাবাদ চলছে। প্রাথমিক তদন্তে জানা গেছে, এই লুটপাটের পরিকল্পনা আগে থেকেই করা হয়েছিল। সিআইএসএফ কর্মীদের আয়কর অফিসার সেজে এই অভিযানের ছক কষা হয়েছিল। তবে কীভাবে তারা এই পরিচয় ব্যবহার করল এবং পরিকল্পনায় আর কারা জড়িত ছিল, তা খতিয়ে দেখা হচ্ছে।
এলাকায় চাঞ্চল্য
এই ঘটনায় চিনার পার্ক এলাকায় ব্যাপক চাঞ্চল্য ছড়িয়েছে। স্থানীয়রা জানিয়েছেন, এমন ঘটনা এলাকার নিরাপত্তা নিয়ে প্রশ্ন তুলেছে। এক বাসিন্দা বলেন, “যারা নিরাপত্তার দায়িত্বে রয়েছেন, তারাই যদি এমন কাজে জড়িয়ে পড়ে, তাহলে আমরা কার ওপর ভরসা করব?” পুলিশ জানিয়েছে, তদন্ত শেষ হলে এই ঘটনার পূর্ণাঙ্গ চিত্র সামনে আসবে।
এই ঘটনা সিআইএসএফের মতো গুরুত্বপূর্ণ বাহিনীর ওপরও প্রশ্ন তুলেছে। তদন্তে আরও কোনও চাঞ্চল্যকর তথ্য বেরিয়ে আসে কি না, সেদিকে নজর রাখছে পুলিশ।