নিউজ

অবিশাস্য! নিজের মাকে ‘পণবন্দি’ করে ওড়িশা বিধানসভার সামনে ছেলের হুমকি

ইতিমধ্যে ওড়িশা বিধানসভার শুরু হয়েছে বর্ষাকালীন অধিবেশন। তাই বিধানসভার সামনে স্বাভাবিক ভাবেই নিরাপত্তা নিয়ে ছিল তোড়জোড়। আর তারমাঝেই ওড়িশা পুলিশকে হতে হলো বিড়ম্বনাময় এক পরিস্থিতির শিকার। আর এরকম কঠিন চ্যালেঞ্জের মুখোমূখী এর আগে রাজ্যের কোনও পুলিশদের এর আগে হতে হয়নি।

এই পরিস্থিতি কোনো জঙ্গি হামলার ঘটনাও নয়। নয় কোনো কুখ্যাত দুস্কৃতির ঘটনা। পুলিশকে এবার নাস্তানাবুদ হতে হলো মানসিকভাবে বিপর্যস্ত এক যুবকের কাছে। আর একটু ওলোট-পালট হয়ে গেলে মুহূর্তেই মধ্যে হয়ে যেতে পারতো চরম বিপদ। টানা এক ঘন্টা জুড়ে ছিল এক উত্তেজনাময় পরিস্থিতি। পুলিশ এখানে দিয়েছে ধৈর্য্যের পরিচয় নেয়নি কোনো হঠকারী সিদ্ধান্ত।

আসল ঘটনাটি হলো, এক মানসিকভাবে অসুস্থ যুবক হঠাৎ করেই তার নিজের মা কে পণবন্দি করে নেয় ,সে রাস্তার মধ্যে হাঁটু গেড়ে বসে মায়ের গলার সামনে রেখেছিলো ধারালো একটি ছুড়ি। আর সেই সময় ঘটে যেতে পারতো যেকোনো ধরণের বড় বিপদ। কারণ ওই যুবক ছিল পুরোপুরি মানসিকভাবে অসুস্থ। তাই সেখানে উপস্থিত সকলেই কোনও অঘটন ঘটে যাবার আশংকা প্রকাশ করেছিল।

মানসিকভাবে অসুস্থ ওই যুবকের হুমকি ছিল যদি কেউ এক পা এগোয় তাহলে সে তার মায়ের নলি কেটে দেবে। আর সেই হুমকি দেওয়ার কারণেই পুলিশও পড়ে যায় চিন্তায়। তবে শেষপর্যন্ত পুলিশি তৎপরতার মাধ্যমেই মানসিকভাবে অসুস্থ ওই যুবকের হাত থেকে নিরাপদে উদ্ধার করা হয় ওই যুবকের মা কে।

আর এই রোমহর্ষক ঘটনা দেখার জন্য ছিল পথচারীদের ভীর। বহু মানুষ নিজের কাজ ফেলে শামিল হয়ে যান এই ঘটনা চাক্ষুষ করার জন্য। ভীর ও টানটান উত্তেজনা এসে মিশেছিল ওড়িশার রাজধানী ভুবেনশ্বরের লোয়ার পিএমজি স্কোয়ারে, রাজ্য বিধানসভা ভবনের সামনে।

কিন্তু এখন প্রশ্ন হলো কেন ওই যুবক হঠাৎ করে তার মা কে পণবন্দি করলো ? অনেকেই শুরুতে ভেবেছিলো হয়তো আর্থিক কোনো দাবি অথবা সরকারি চাকরির দাবিতেই ওই যুবক করছিলো এমন কাজ। তবে তা নয়। ওই মানসিক ভারসাম্যহীন যুবকের দাবি ছিল ‘রাজ্যের ‘দুর্নীতিগ্রস্ত’ মন্ত্রীদের বিরুদ্ধে কড়া ব্যবস্থা নিতে হবে। তাঁর আরও দাবি, সেই আশ্বাস না পেলে, সে তাঁর মাকে বিধানসভার সামনেই খুন করবে।’

জানা গেছে ওই মানসিক ভারসাম্যহীন যুবকটির নাম জিতেন্দ্র পাল। তার মায়ের নাম ঝর্ণা পাল। তারা ওড়িশার নয়াগড় জেলার ডায়াস্পোল্লা অঞ্চলে থাকে। বৃহস্পতিবার দুপুরবেলা ওই যুবক মায়ের সাথেই হাঁটতে হাঁটতে চলে আসে ওড়িশার বিধানসভা ভবনের সামনে। আর তখনি সেই যুবক সকলকে অবাক করে দিয়ে তার মায়ের গলার সামনে ধারালো ছুড়ি ধরে ঘটে এই কান্ড। আর চিৎকার করে বলতে থাকে ‘দুর্নীতিগ্রস্ত মন্ত্রীদের বিরুদ্ধে কড়া ব্যবস্থা না নিলে, সে তাঁর মায়ের গলার নলি কেটে ফেলবে।’

আর এই ঘটনার খবরে ও আকস্মিকতায় পুলিশও প্রথমে বুঝে উঠতে পারছিলো না কি করবে। কারণ ওই যুবক পুলিশকে উদ্যেশ্য করে বলে যে যদি কেউ তার মা কে উদ্ধার করতে আসে তাহলে সে তার মা কে মেরে ফেলবে।

পুলিশের এক আধিকারিক এই প্রসঙ্গে জানিয়েছেন যে জিতেন্দ্র নামক ওই যুবক চিৎকার করেও ইংরাজিতে বলতে থাকে যে, মুখ্যমন্ত্রী ভাল মানুষ। কিন্তু তাঁর মন্ত্রীরা দুর্নীতিগ্রস্ত।’পরবর্তীতে ধৈর্য্য ও উপস্থিত বুদ্ধির পরিচয় দিয়ে পুলিশ আক্রান্ত মহিলাকে উদ্ধার করতে সক্ষম হয়েছে।

পুলিশের এক আধিকারিক জানান যে, জিতেন্দ্র নামক ওই যুবক চিৎকার করেও ইংরাজিতে বলতে থাকে যে, মুখ্যমন্ত্রী ভাল মানুষ। কিন্তু তাঁর মন্ত্রীরা দুর্নীতিগ্রস্ত। দুই মন্ত্রীর নাম উল্লেখও করে সে। পরে অনেক কৌশল করে পুলিশ ওই মহিলাকে উদ্ধার করে।

এই প্রসঙ্গে ভুবনেশ্বরের ডেপুটি কমিশনার অফ পুলিশ উমাশংকর দাশ বলেছেন ‘যে পুলিশ অফিসাররা উপস্থিত বুদ্ধি খাটিয়ে মহিলাকে উদ্ধার করেছেন, তাঁদের বুদ্ধি, ধৈর্য এবং দক্ষতার জন্য পুরস্কৃত করা হবে।ওই যুবক মানসিকভাবে অসুস্থ। বিগত কয়েক বছর ধরে তাঁর চিকিৎসা চলছে। বৃহস্পতিবার ডাক্তার দেখাতেই সে শহরে এসেছিল। এদিন তাঁকে আটকের পর, কটকের এসসিবি মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতালে পাঠানো হয়।

Back to top button