নিউজদেশ

বিশ্বের সমস্ত দেশের থেকে আলাদা ভারতীয় পতাকা, পেয়েছে সবচেয়ে সুন্দর পতাকার খেতাব, জেনেনিন অজানা কিছু তথ্য

পৃথিবীতে প্রত্যেকটি স্বাধীন দেশের একটি করে জাতীয় পতাকা থাকবে। পৃথিবীতে বসবাসকারী সমস্ত জাতির কাছে একটি পতাকা ভীষণ গুরুত্বপূর্ণ। জাতীয় পতাকা সেই দেশের সমগ্র জাতির প্রতীক মর্যাদা এবং আদর্শের প্রতীক হিসাবে মেনে নেওয়া হয়। জাতীয় পতাকার সম্মান রক্ষা প্রত্যেকটি দেশের নাগরিকের মৌলিক কর্তব্য হিসেবে বিবেচিত হয়। কোনভাবেই এই পতাকাকে অমর্যাদা করা যাবে না।

পৃথিবীর অন্যান্য স্বাধীন দেশের মতো এই ভারতবর্ষের রয়েছে একটি তেরঙ্গা পতাকা। পতাকাটি আয়তাকার। পতাকায় রয়েছে তিনটি রং। তাই একে তেরঙ্গা পতাকা বলা হয়। সবার ওপরে রয়েছে গেরুয়া। গেরুয়া হল ত্যাগ এর প্রতীক। মাঝে রয়েছে সাদা শান্তি ও পবিত্রতার প্রতীক। একদম নিচে রয়েছে সবুজ জীবনধর্ম, নির্ভীকতা, এবং তারুণ্যের প্রতীক। পতাকার মধ্যে সাদার মাঝে রয়েছে চব্বিশটি কাটা যুক্ত একটি চক্র। এই চব্বিশটি কাটার অর্থ হলো ভালোবাসা, সাহস, মহানুভবতার, উদারতা, বিশ্বাস, করুনা, কমনীয়তা প্রভৃতি। চক্রটি দেশের উন্নতি এবং প্রগতির প্রতীক।

স্বাধীনতার প্রাক্কালে জেনে নিন এই তেরঙ্গা পতাকা আর কয়েকটা বৈশিষ্ট্য

ভারতের সর্বপ্রথম এই তেরঙ্গা পতাকা উত্তোলন করেছিলেন বাহাদুর শাহ জাফর। ১৮৫৭ সালে প্রথম স্বাধীনতা যুদ্ধ ঘোষণা হওয়ার সময় তিনি এই পতাকা উত্তোলন করেছিলেন। তখন অবশ্য পতাকার রং ছিল সবুজ। তার ওপরে ছিল সোনালী রঙের পদ্ম এবং হাত রুটি।

এর পরে অবশ্য ভগিনী নিবেদিতা ১৯০৫ খ্রিস্টাব্দের লাল রঙের ওপর পতাকার নকশা তৈরি করেছিলেন। পতাকার চারদিকে ছিল ১০৮টি শিখা, মাঝখানে ছিল হলুদ রঙের বজ্রের চিহ্ন। বামদিকে বাংলাতে লেখা ছিল বন্দে আর ডানদিকে লেখা ছিল মাতরম।

পরবর্তীকালে মাদাম ভিকাজি রুস্তম কামা বিদেশের মাটিতে প্রথম ভারতের স্বাধীনতার পতাকা উত্তোলন করেছিলেন, অবশ্য সালটি ছিল ১৯০৭ সাল।

১৯১৭ সালে অবশ্য শ্রীমতি অ্যানি বেসান্ত এবং বালগঙ্গাধর তিলক নতুন করে পতাকার নকশা কথা ভেবেছিলেন।

১৯২১ সালে গান্ধীজি প্রথম পতাকা নিয়ে আসেন। তবে নকশা একটু অন্য রকম। পতাকাটি উপর দিক থেকে তিনটি রং। আড়াআড়িভাবে তিনটি সমানভাবে ভাগ করা। সাদা, সবুজ এবং লাল। মাঝখানে রেখা ছিল।

১৯৪৭ সালে ৩ রা জুন ব্রিটিশ সরকার ঘোষণা করেছিল ১৫ই আগস্ট ভারতকে স্বাধীন বলে। তখন পতাকা বানাতে গণ পরিষদের অস্থায়ী কমিটি ২২ জুলাই পতাকা বানায় এবং এটি ১৪ ই আগষ্ট মধ্য রাতে জাতির উদ্দেশ্য তুলে দেওয়া হয়।

এই জাতীয় পতাকা ব্যবহারের কয়েকটি নিয়ম রয়েছে। জাতীয় পতাকা উত্তোলনের সময় যথেষ্ট মর্যাদা দেখাতে হবে। পাশে যদি অন্য কোন পতাকা থাকে তাহলে অবশ্যই জাতীয় পতাকার উচ্চতা সেই পতাকার উচ্চতা থেকে বেশি রাখতে হবে। জাতীয় শোক বা বিশেষ কোন ব্যক্তির মৃত্যুতে অবশ্যই পতাকা অর্ধনমিত রাখতে হবে। বাজনার তালে তালে এই পতাকাকে ওঠানো এবং নামাতে হবে। দিবসের দিনে অবশ্যই জাতি-ধর্ম নির্বিশেষে প্রত্যেকে জাতীয় পতাকা উত্তোলন করতে পারবেন। ছেঁড়াফাটা বা নোংরা পতাকা ব্যবহার করা যাবে না। সর্বদা গেরুয়া রংকে উপরে রাখতে হবে। চিতায়, কবরে বা কফিনে কখনো জাতীয় পতাকা দেওয়া যাবে না। কোন ব্যবসার কাজে যদি জাতীয় পতাকা ব্যবহার করতেই হয়, তাহলে অবশ্যই কেন্দ্রীয় সরকারের অনুমতি নিতে হবে।

Back to top button