নিউজরাজ্য

“দুর্নীতি করে শিক্ষকতার চাকরি!”-বেআইনি নিয়োগের অভিযোগে চাকরি গেল TMC-র শিক্ষক নেতার

হাওড়ার একটি স্কুলের শিক্ষক তথা তৃণমূল শিক্ষক সংগঠনের নেতা শেখ সিরাজুল ইসলামকে চাকরি থেকে বরখাস্ত করার নির্দেশ দিয়েছে কলকাতা হাইকোর্ট। বুধবার বিচারপতি রাজা শেখর মান্থার ডিভিশন বেঞ্চ স্পষ্টভাবে জানিয়ে দেয় যে, দুর্নীতির মাধ্যমে চাকরি পাওয়া এই শিক্ষক নেতাকে কোনওভাবেই কর্মস্থলে রাখা যাবে না। আদালতের নির্দেশ অনুযায়ী, বুধবার থেকেই তাঁর বরখাস্তের আদেশ কার্যকর হবে।

দুর্নীতির অভিযোগে চাকরি হারালেন শিক্ষক নেতা

তৃণমূলের মাধ্যমিক শিক্ষাসেলের সাধারণ সম্পাদক শেখ সিরাজুল ইসলামের বিরুদ্ধে নিয়োগ দুর্নীতিতে জড়িত থাকার গুরুতর অভিযোগ উঠেছিল। মামলাকারীর আইনজীবী ফিরদৌস শামিম আদালতে জানান, ২০০১ সালে হাইকোর্টের নির্দেশে সিরাজুল একবার চাকরি হারিয়েছিলেন। সে সময় তাঁর বিরুদ্ধে শ্লীলতাহানির অভিযোগ উঠেছিল। তবুও তিনি পুনরায় চাকরি ফিরে পান এবং শিক্ষকতা চালিয়ে যান। পরবর্তীতে তাঁর বিরুদ্ধে নিয়োগ দুর্নীতিতে জড়িত থাকার নতুন অভিযোগ সামনে আসে।

পুলিশের গাফিলতিতে ক্ষুব্ধ আদালত

মামলার শুনানি চলাকালীন আদালত প্রশ্ন তোলে, একাধিক গুরুতর অভিযোগ থাকা সত্ত্বেও কীভাবে শেখ সিরাজুল ইসলামকে শিক্ষা সংক্রান্ত পদে নিয়োগ করা হল। পাশাপাশি, তাঁর বিরুদ্ধে এফআইআর দায়ের না করার জন্য পুলিশের ভূমিকা নিয়ে বিচারপতি বিশ্বজিৎ বসুর বেঞ্চ ক্ষোভ প্রকাশ করে। আদালতের তিরস্কারের পর পুলিশ তড়িঘড়ি এফআইআর দায়ের করে।

বরখাস্তের নির্দেশ

বুধবার বিচারপতি রাজা শেখর মান্থার বেঞ্চে মামলার শুনানি হয়। বিচারপতি তাঁর পর্যবেক্ষণে জানান, শেখ সিরাজুল ইসলামের নিয়োগ সম্পূর্ণ বেআইনি এবং দুর্নীতিপূর্ণ। তাই তাঁকে অবিলম্বে চাকরি থেকে বরখাস্ত করার নির্দেশ দেওয়া হয়েছে। আদালতের এই রায়ের ফলে তৃণমূল নেতার রাজনৈতিক ভবিষ্যৎ অনিশ্চিত হয়ে পড়েছে বলে মনে করছেন আইনজীবী মহলের একাংশ।

রাজনৈতিক মহলে চাঞ্চল্য

এই রায়কে কেন্দ্র করে রাজনৈতিক মহলে ব্যাপক চাঞ্চল্য ছড়িয়েছে। বিরোধী দলগুলি তৃণমূল সরকারের বিরুদ্ধে দুর্নীতিকে প্রশ্রয় দেওয়ার অভিযোগ তুলেছে। অন্যদিকে, তৃণমূলের তরফে জানানো হয়েছে যে, তারা আদালতের রায়কে সম্মান জানাচ্ছে এবং প্রয়োজনে আইনি পথে পরবর্তী পদক্ষেপ গ্রহণ করবে।

এই ঘটনা শিক্ষাক্ষেত্রে দুর্নীতির বিরুদ্ধে কঠোর পদক্ষেপের একটি উল্লেখযোগ্য নজির হিসেবে বিবেচিত হচ্ছে।

Back to top button