BigNews: ২০,০০০ কোটি টাকার রেশন দুর্নীতির হদিশ! কোর্টে জানিয়ে দিলো ED
রেশন দুর্নীতি মামলায় ১০ হাজার কোটি টাকা পাচারের অভিযোগে বনগাঁ পুরসভার প্রাক্তন চেয়ারম্যান তথা তৃণমূল নেতা শঙ্কর আঢ্যকে ১৪ দিনের ইডি হেফাজতে পাঠিয়েছেন কলকাতা হাইকোর্ট।
আজ শুক্রবার রাত সাড়ে এগারোটা নাগাদ শঙ্কর আঢ্যকে গ্রেপ্তার করে ইডি। এর পর তাঁকে নিয়ে যাওয়া হয় সল্টলেকের সিজিও কমপ্লেক্সে। শনিবার সকালে জোকা ইএসআই হাসপাতালে শারীরিক পরীক্ষার পরে তাঁকে ব্যাঙ্কশাল কোর্টের ইডি বিশেষ আদালতে পেশ করা হয়।
আদালতে ইডি-র আইনজীবী ধীরাজ ত্রিবেদী বিচারক শুভেন্দু সাহার উদ্দেশে বলেন, ‘শঙ্কর আঢ্যের সঙ্গে জ্যোতিপ্রিয় মল্লিকের গভীর যোগাযোগ রয়েছে। শঙ্করের বৈদেশিক মুদ্রা বিনিময় এজেন্সির মাধ্যমে প্রায় ২০ হাজার কোটি অবৈধ টাকা ভুয়ো নথিপত্রের মাধ্যমে বিদেশে গিয়েছে। এরমধ্যে ১০ হাজার কোটি টাকা পাচারের সঙ্গে সরাসরি যুক্ত রয়েছেন প্রাক্তন মন্ত্রী।’
একই সঙ্গে ইডি-র আরও এক আইনজীবী ভাস্কর বন্দ্যোপাধ্যায় সওয়ালে বলেন, ‘তদন্তে আরও কিছু উঠে আসতে পারে। ফলে শঙ্কর আঢ্যকে হেফাজতে নেওয়া জরুরি।’ আদালতে এদিন ইডির পক্ষ থেকে জানানো হয়, গত ১০ বছর ধরে এই দুর্নীতি চলছে।
শঙ্করের আইনজীবী জাকির হোসেন অবশ্য দুর্নীতির সঙ্গে মক্কেলের কোনও যোগ নেই বলে পাল্টা দাবি করেন। বিচারকের কাছে যুক্তি তুলে ধরে তিনি বলেন, ‘দীর্ঘদিনের ব্যবসা শঙ্করের। আরবিআই-এর নিয়ম মেনেই ব্যবসা করেছেন মক্কেল। কোনও খোঁজ নেওয়ার থাকলে তারা নেবে। ইডি মাত্র ৮ লক্ষ টাকা উদ্ধার করেছে বাড়ি থেকে। আর বিদেশি মুদ্রা বিনিময় কোনও অবৈধ কাজ নয়। তাই যে কোনও শর্তে জামিন দেওয়া হোক।’
আদালত শঙ্করের হেফাজত চাওয়ার যুক্তি মান্য করে তাঁকে ১৪ দিনের ইডি হেফাজতের নির্দেশ দেন।
ইডির অভিযোগ, শঙ্করের ফরেক্স সংস্থার মাধ্যমে মোট ২০ হাজার কোটি টাকা বিদেশে পাঠানো হয়েছে। এর মধ্যে ১০ হাজার কোটি টাকা পাঠিয়েছেন জ্যোতিপ্রিয় মল্লিক। তদন্তকারী সংস্থার দাবি, মোট ৯০টি ফরেক্স সংস্থার মাধ্যমে বাংলাদেশ এবং দুবাইয়ে ২ হাজার কোটি টাকা পাঠানো হয়েছিল বলে প্রমাণও মিলেছে। এত বিপুল পরিমাণ অর্থ জ্যোতিপ্রিয়র একারই কি না, সে বিষয়েও তদন্ত চলছে।
তদন্তকারী সংস্থার অভিযোগ, বিদেশে টাকা পাঠাতে গিয়ে শঙ্করের সংস্থা ভুয়ো নথিপত্র ব্যবহার করত। কখনও টিকিট কেনার নাম করে, কখনও পাসপোর্টের নথি ব্যবহার করে দেখানো হতো, বিভিন্ন ব্যক্তি বিদেশে টাকা পাঠাচ্ছেন। কিন্তু বাস্তবে তেমনটা হতো না। অন্য কারও নথি ব্যবহার করে জ্যোতিপ্রিয়র টাকা যেত বিদেশে। তদন্তকারীদের যুক্তি, মিল মালিকদের কাছ থেকে টাকা আদায়ের পরে প্রথমে তা ডলারে কনভার্ট করা হতো। এর পর নির্দিষ্ট অ্যাকাউন্টে ট্রান্সফার হয়ে যেত।
এদিকে, শঙ্কর আঢ্য সংবাদমাধ্যমে দাবি করেছেন, তিনি বা তাঁর পরিবার কোনও দুর্নীতির সঙ্গে জড়িত নন। এমনকী তিনি জ্যোতিপ্রিয়কেও চেনেন না।