
হোটেল বা রেস্তরাঁয় খাবারের বিলে সার্ভিস চার্জ বাধ্যতামূলকভাবে চাপানো যাবে না বলে গুরুত্বপূর্ণ রায় দিয়েছে দিল্লি হাইকোর্ট। শুক্রবার বিচারপতি প্রতিভা এম সিং-এর নেতৃত্বাধীন বেঞ্চ এই রায় ঘোষণা করে জানিয়েছে, গ্রাহকরা চাইলে সার্ভিস চার্জ দিতে পারেন, কিন্তু তা জোর করে নেওয়া একেবারেই অগ্রহণযোগ্য। এই রায়ের মাধ্যমে সেন্ট্রাল কনজিউমার প্রোটেকশন অথরিটি (সিসিপিএ)-র ২০২২ সালের নির্দেশিকা বহাল রাখা হয়েছে।
রেস্তরাঁ সংগঠনের আবেদন খারিজ, জরিমানা ১ লক্ষ
সিসিপিএ-র নির্দেশিকার বিরুদ্ধে রেস্তরাঁ সংগঠনগুলি হাইকোর্টে আবেদন জানিয়েছিল। তারা দাবি করেছিল যে সার্ভিস চার্জ নেওয়ার অধিকার তাদের রয়েছে। কিন্তু আদালত এই আবেদন খারিজ করে দিয়ে সংগঠনগুলির ওপর ১ লক্ষ টাকা জরিমানা আরোপ করেছে। আদালত বলেছে, সিসিপিএ শুধু একটি উপদেষ্টা সংস্থা নয়, বরং অসাধু ব্যবসায়িক কার্যকলাপ রোধ এবং গ্রাহকদের স্বার্থ রক্ষার জন্য নির্দেশিকা জারি করার ক্ষমতা রাখে।
সিসিপিএ-র নির্দেশিকা কী বলে?
২০২২ সালে জারি করা নির্দেশিকায় সিসিপিএ স্পষ্ট জানিয়েছিল যে হোটেল বা রেস্তরাঁগুলি খাবারের বিলে সার্ভিস চার্জ যোগ করতে পারবে না। এমনকি অন্য কোনও নামে এই চার্জ গ্রাহকদের ওপর চাপানোও নিষিদ্ধ। নির্দেশিকায় বলা হয়েছে, গ্রাহকদের সার্ভিস চার্জ দেওয়ার জন্য বাধ্য করা যাবে না। তবে, গ্রাহকদের জানানো যেতে পারে যে তারা স্বেচ্ছায় এই চার্জ দিতে পারেন।
এছাড়াও, সিসিপিএ নির্দেশ দিয়েছে যে সার্ভিস চার্জ না দেওয়ার কারণে কোনও গ্রাহকের পরিষেবায় কমতি রাখা যাবে না বা তাদের প্রবেশে বাধা দেওয়া যাবে না। বিলের সঙ্গে সার্ভিস চার্জ যোগ করে তার ওপর জিএসটি আরোপ করাও বন্ধ করতে হবে।
“সিসিপিএ-র নির্দেশিকা বাধ্যতামূলক”
হাইকোর্ট তার রায়ে বলেছে, কনজিউমার প্রোটেকশন অ্যাক্ট ২০১৯-এর অধীনে সিসিপিএ-র নির্দেশিকা জারি করার পূর্ণ ক্ষমতা রয়েছে। এটি কেবল পরামর্শ নয়, বরং বাধ্যতামূলকভাবে মেনে চলার বিষয়। আদালতের এই পর্যবেক্ষণে স্পষ্ট যে গ্রাহকদের স্বার্থ রক্ষাই এই রায়ের মূল উদ্দেশ্য।
গ্রাহকদের জন্য স্বস্তি
এই রায়কে গ্রাহকদের জন্য একটি বড় জয় হিসেবে দেখা হচ্ছে। অনেকেই দীর্ঘদিন ধরে অভিযোগ করে আসছিলেন যে হোটেল ও রেস্তরাঁগুলি বাধ্যতামূলকভাবে সার্ভিস চার্জ যোগ করে তাদের ওপর অতিরিক্ত আর্থিক চাপ সৃষ্টি করছে। দিল্লি হাইকোর্টের এই রায়ের ফলে এখন থেকে গ্রাহকরা স্বাধীনভাবে সিদ্ধান্ত নিতে পারবেন তারা সার্ভিস চার্জ দিতে চান কি না।
এই রায় কেবল দিল্লির জন্যই নয়, দেশের অন্যান্য অংশেও হোটেল ও রেস্তরাঁ শিল্পের ওপর প্রভাব ফেলবে বলে মনে করছেন বিশেষজ্ঞরা।