লাইফস্টাইল

রাগ কমিয়ে মাথা ঠান্ডা রাখতে যে খাবার খাবেন, জেনেনিন

মাতৃগর্ভে একটি মেয়ের বয়স যখন ১৬-২০ সপ্তাহ মাত্র, তখন ডিম্বাণুর একদম আদি অবস্থা, যেটা চিকিৎসার ভাষায় বলা হয় “জার্ম সেল”, তার সংখ্যা থাকে ৬-৭ মিলিয়ন এবং এটাই সর্বোচ্চ সংখ্যা। এরপর শুরু হয় সংখ্যা কমার পালা।

জন্মের সময় জার্মসেলের সংখ্যা থাকে ৫ লাখ থেকে ২ মিলিয়ন। তার মানে শতকরা ৭০-৮০ ভাগ জার্মসেল নষ্ট হয়ে যায়, একটি মেয়ে শিশু তার পার্থিব জীবন শুরু করার আগেই।

প্রথম মাসিক যখন শুরু হয়, তখন ডিম্বাণুর পরিমাণ থাকে ৩ লাখ। একটি ডিম্বাণুকে পরিপক্ক করার জন্য প্রতি মাসে প্রায় ১০০০টি অপরিপক্ক ডিম্বাণুকে আত্মাহুতি দিতে হয়।

একটি মেয়ের প্রথম ডিম্বাণু তৈরি হওয়া বা ওভুলেশন হওয়া হতে শুরু করে মেনোপজে পৌঁছানো পর্যন্ত প্রায় ৪০০-৫০০টি ওভুলেশন হতে পারে সর্বমোট। কোথায় ৬-৭ মিলিয়ন দিয়ে যাত্রা শুরু হয় আর শেষ হয় মাত্র ৪০০-৫০০টি দিয়ে।

ব্যস্ত জীবনযাপন, অনিয়মিত ডায়েট এবং স্ট্রেসের কারণে দিন দিন বন্ধ্যাত্বের সমস্যা বাড়ছে। এ ছাড়া এই ডিম্বাণু নিঃশেষ হওয়ার বিষয়টি একদম প্রকৃতিপ্রদত্ত একটি একমুখী যাত্রা। কেউ কেউ ভাবতে পারেন, জন্মনিয়ন্ত্রণের কোনো পদ্ধতি ব্যবহার করে ওভুলেশন বন্ধ রাখলে বোধ করি ডিম্বাণুর সংখ্যা কমে যাওয়া রোধ করা যাবে। এটা একেবারেই ভ্রান্ত ধারণা। বরং কখনও কখনও আরও ত্বরান্বিত হারে ডিম্বাণু নিঃশেষ হতে থাকে।

আসুন জেনে নেই যে সব কারণে নারীদের ডিম্বাণু নিঃশেষ হতে পারে ও বন্ধ্যাত্বের ঝুঁকি বাড়ে।

১.ওভারী বা ডিম্বাশয়ে কোনো সিস্ট বা সিস্টের অপারেশন হলে বা কোনো কারণে একটি ওভারী কেটে ফেললে।

২. কোনো কারণে ডিম্বনালী বা ফেলোপিয়ান টিউব কেটে ফেললে, যা ওভারীর রক্ত চলাচল কমিয়ে দিতে পারে।

৩.পলিসিস্টিক রোগীদের চিকিৎসা হিসেবে কখনও সখনও ওভারী ড্রিলিং করতে হয়, যেটা ওভুলেশন হওয়াতে সাহায্য করে। কিন্তু রোগী যদি পলিসিস্টিক ওভারী সমস্যায় না ভুগেন কিন্তু কোনো কারণে ড্রিলিং করা হয়, এটা ওভারীর ডিম্বাণুর পরিমাণ কমিয়ে দেয়।

৪.জেনেটিক কোনো অসুখ কোনো পরিবারে থাকতে পারে, যার কারণে মেনোপোজ ত্বরান্বিত হয় বা খুব তাড়াতাড়ি ডিম্বাণু নিঃশেষ হয়ে যায় (যেমন “মোজাইক টার্নার সিনড্রোম”-এর রোগী,যারা দেখতে পরিপূর্ণ নারীর মতো, এদের মাসিক নিয়মিতভাবেই হয় কিন্তু খুব তাড়াতাড়ি ওভারীর স্বাভাবিক কার্যক্রম বন্ধ হয়ে যায়)।

৫. ক্যান্সারের চিকিৎসার পার্শ্বপ্রতিক্রিয়া হিসেবেও হতে পারে।

৭.পরিবেশ দূষণ কিংবা খাবারে ভেজাল ও কোন ভাবে দায়ী কিনা এটা এখন গবেষণার পর বলা যাবে।

একটি মেয়ের ৩০ বছর বয়সের পর হতে ডিম্বাণু নিঃশেষ হবার পরিমাণ ত্বরান্বিত হয় আর ৩৫ বছরের পর আরও দ্রুত। আর একটা বয়সের পর ডিম্বাণুর কোয়ালিটি ও খারাপ হতে থাকে। তাই দেখা যায়, ৪৭/৪৮ বছর বয়সেও মাসিক নিয়মিতই হয় অনেকের কিন্তু প্রেগন্যান্সির সম্ভাবনা অনেক অনেক কম থাকে।

তাই ডিম্বাণু নিঃশেষ হবার আগেই যেন আমরা এই বিষয়টিতে সতর্ক হই। ক্যারিয়ার গড়ার বয়সের সীমারেখা নেই কিন্তু মাতৃত্বের বয়সের কিন্তু সীমারেখা আছে, এটা মাথায় রাখতে হবে সবসময়।

Back to top button