লাইফস্টাইল

প্রসবের পর চুল পড়া কমাতে মেনে চলুন এই ৫ টিপস

গর্ভাবস্থায় এবং প্রসবের পর মহিলাদের শরীরে হরমোনের ব্যাপক পরিবর্তন ঘটে। এই পরিবর্তনের কারণে অনেক সময় তাদের বিভিন্ন স্বাস্থ্য সমস্যার সম্মুখীন হতে হয়, যার মধ্যে অন্যতম হলো চুল পড়া। প্রসবোত্তর চুল পড়া সাধারণত ৬ থেকে ১২ মাসের মধ্যে আপনাআপনি কমে যায়। এই সময় মহিলাদের ধৈর্য ধরতে এবং একটি স্বাস্থ্যকর জীবনধারা অনুসরণ করতে হয়। তবে, যদি এক বছর পরেও চুল পড়ার সমস্যা অব্যাহত থাকে, তাহলে এটি নিয়ন্ত্রণে রাখতে নিম্নলিখিত ৫টি টিপস অনুসরণ করতে পারেন:

১. পুষ্টিকর খাবার গ্রহণ: চুল পড়া নিয়ন্ত্রণে আনার প্রথম এবং সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ পদক্ষেপ হলো আপনার খাদ্যাভ্যাস উন্নত করা। এর জন্য আপনার খাদ্যতালিকায় পর্যাপ্ত পরিমাণে প্রোটিন, আয়রন এবং ভিটামিন ই ও ডি সমৃদ্ধ খাবার অন্তর্ভুক্ত করুন। এছাড়াও, পালং শাক, ডিম, বাদাম, মাছ এবং ডালের মতো খাবার নিয়মিত খান। প্রোটিন চুলের মূল উপাদান এবং আয়রন চুলের গোড়ায় অক্সিজেন সরবরাহ করতে সাহায্য করে। ভিটামিন ই এবং ডি চুলের স্বাস্থ্য বজায় রাখতে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করে।

২. মাইল্ড শ্যাম্পু ব্যবহার: চুল ধোয়ার জন্য সর্বদা সালফেট-মুক্ত এবং প্রাকৃতিক উপাদান সমৃদ্ধ শ্যাম্পু ব্যবহার করুন। সালফেট চুলের প্রাকৃতিক তেল কেড়ে নেয়, যা চুলকে দুর্বল করে তোলে এবং চুল পড়ার কারণ হতে পারে। চুলের প্রাকৃতিক আর্দ্রতা বজায় রাখতে সপ্তাহে ২-৩ বারের বেশি চুল ধোয়া উচিত নয়।

৩. মাথার ত্বকে ম্যাসাজ: মাথার ত্বকে নিয়মিত তেল মালিশ করলে রক্ত সঞ্চালন উন্নত হয় এবং চুলের গোড়া মজবুত হয়, যা চুল পড়া কমাতে সহায়ক। নারকেল তেল, বাদাম তেল বা জলপাই তেল হালকা গরম করে সপ্তাহে ২ বার মাথার ত্বকে আলতো হাতে ম্যাসাজ করুন। এটি চুলের ফলিকলকে উদ্দীপিত করে এবং চুলের বৃদ্ধিকে উৎসাহিত করে।

৪. মানসিক চাপ নিয়ন্ত্রণ: প্রসবের পরের মানসিক চাপও চুল পড়ার একটি অন্যতম কারণ হতে পারে। নতুন মায়ের জীবনে অনেক পরিবর্তন আসে, যা মানসিক চাপের সৃষ্টি করতে পারে। এই চাপ নিয়ন্ত্রণে রাখতে যোগব্যায়াম, ধ্যান বা হালকা ব্যায়াম এবং হাঁটার মতো কার্যকলাপের মাধ্যমে আপনার মনকে শান্ত রাখার চেষ্টা করুন। পর্যাপ্ত ঘুম এবং বিশ্রামও মানসিক চাপ কমাতে সহায়ক।

৫. রাসায়নিক চিকিৎসা পরিহার: গর্ভাবস্থার পরে যদি আপনার চুল পড়তে শুরু করে, তাহলে ভুল করেও চুলে রঙ করা, স্ট্রেইটনিং বা অন্য কোনো রাসায়নিক চিকিৎসা ব্যবহার করা এড়িয়ে চলুন। এই ধরনের রাসায়নিক পদার্থ চুলকে আরও দুর্বল করে তোলে এবং চুল পড়ার সমস্যা বাড়িয়ে দিতে পারে।

বিশেষ পরামর্শ:

যদি আপনার অতিরিক্ত চুল পড়ে যায় এবং উপরোক্ত টিপসগুলো অনুসরণ করার পরেও কোনো উন্নতি না দেখেন, তাহলে অবশ্যই একজন ডাক্তারের সাথে পরামর্শ করুন। ডাক্তার আপনার শরীরে আয়রন, থাইরয়েড এবং ভিটিটামিনের ঘাটতি আছে কিনা তা পরীক্ষা করার জন্য কিছু পরীক্ষা করাতে পারেন এবং সেই অনুযায়ী সঠিক চিকিৎসা প্রদান করতে পারেন। মনে রাখবেন, সঠিক সময়ে ডাক্তারের পরামর্শ নেওয়া চুল পড়ার সমস্যা নিয়ন্ত্রণে অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ।

Back to top button