অর্থনীতি

মুকেশ আম্বানি এখনও ভারতের শীর্ষ ধনী, তবে সম্পদ বৃদ্ধিতে এগিয়ে গৌতম আদানি

হুরুন ইন্ডিয়া ২০২৫ সালের জন্য ধনীদের তালিকা প্রকাশ করেছে। এই তালিকায় রিলায়েন্স ইন্ডাস্ট্রিজের চেয়ারম্যান মুকেশ আম্বানি গত বছরের তুলনায় ১ লক্ষ কোটি টাকার সম্পদ হ্রাস সত্ত্বেও ভারতের সবচেয়ে ধনী ব্যক্তি হিসেবে তাঁর স্থান ধরে রেখেছেন। তাঁর মোট সম্পদের পরিমাণ ৯১.৮ বিলিয়ন ডলার (প্রায় ৮.৬ লক্ষ কোটি টাকা), যা তাঁকে হুরুন গ্লোবাল রিচ লিস্ট ২০২৫-এ বিশ্বের ১৮তম ধনী ব্যক্তি হিসেবে স্থান দিয়েছে। তবে, ঋণের পরিমাণ বৃদ্ধির কারণে তিনি বিশ্বের শীর্ষ ১০ ধনী ব্যক্তির তালিকা থেকে বাদ পড়েছেন।

গৌতম আদানির উত্থান
আদানি গ্রুপের প্রতিষ্ঠাতা গৌতম আদানি এ বছর ভারতের সবচেয়ে বেশি সম্পদ অর্জনকারী ব্যক্তি হিসেবে আবির্ভূত হয়েছেন। ৬২ বছর বয়সী এই শিল্পপতির সম্পদ গত এক বছরে ১৩% বৃদ্ধি পেয়ে ৫৩.৫ বিলিয়ন ডলারে (প্রায় ৮.৪ লক্ষ কোটি টাকা) পৌঁছেছে। এই বৃদ্ধির পরিমাণ প্রায় ১ লক্ষ কোটি টাকা। হুরুন গ্লোবাল রিচ লিস্টে তিনি বিশ্বব্যাপী ২৭তম স্থানে রয়েছেন। আদানির এই উত্থান ভারতের ব্যবসায়িক পরিমণ্ডলে তাঁর ক্রমবর্ধমান প্রভাবের প্রমাণ।

রোশনি নাদারের ঐতিহাসিক অর্জন
এইচসিএল টেকনোলজিসের চেয়ারপার্সন রোশনি নাদার বিশ্বের পঞ্চম ধনী মহিলা হিসেবে স্থান পেয়েছেন। তিনি বিশ্বের শীর্ষ ১০ ধনী মহিলার তালিকায় স্থান পাওয়া প্রথম ভারতীয় মহিলা। তাঁর মোট সম্পদের পরিমাণ ৩.৫ লক্ষ কোটি টাকা। তাঁর বাবা শিব নাদার এইচসিএলের ৪৭% শেয়ার তাঁর কাছে হস্তান্তর করেছেন, যা তাঁকে এই অভূতপূর্ব সাফল্য এনে দিয়েছে। ইকোনমিক টাইমসের প্রতিবেদন অনুসারে, এটি ভারতীয় নারী উদ্যোক্তাদের জন্য একটি গুরুত্বপূর্ণ মাইলফলক।

এলন মাস্কের শীর্ষস্থান
বিশ্বের সবচেয়ে ধনী ব্যক্তি হিসেবে টেসলা ও স্পেসএক্সের প্রধান এলন মাস্ক তাঁর স্থান ধরে রেখেছেন। ১০০ বিলিয়ন ডলারের সম্পদ হ্রাস সত্ত্বেও তিনি ৪০০ বিলিয়ন ডলারের মাইলফলক অতিক্রম করেছেন। হুরুন রিসার্চ রিপোর্টে বলা হয়েছে, গত পাঁচ বছরে চতুর্থবারের মতো তিনি এই অবস্থানে রয়েছেন।

ভারতের কোটিপতিদের উত্থান
ভারত বিশ্ব পর্যায়ে বিলিয়নেয়ারদের তৃতীয় বৃহত্তম কেন্দ্র হিসেবে আরও শক্তিশালী হয়েছে। ২০২৪ সালে ভারতের কোটিপতির সংখ্যা বেড়ে ১৯১-এ দাঁড়িয়েছে, যা গত বছর ছিল ১৬৫। তাদের মোট সম্পদের পরিমাণ প্রায় ৯৫০ বিলিয়ন ডলার, যা ভারতকে কোটিপতিদের সম্পদের দিক থেকে আমেরিকা (৮৭০ বিলিয়নেয়ার) এবং চিনের পর তৃতীয় স্থানে রেখেছে। নিউ ইয়র্ক সিটি টানা দ্বিতীয় বছর বিশ্বের বিলিয়নেয়ার রাজধানী হিসেবে রয়েছে, যেখানে ১২৯ জন কোটিপতি বসবাস করেন।

এই তালিকা ভারতের অর্থনৈতিক প্রভাব ও ক্রমবর্ধমান বৈশ্বিক উপস্থিতির প্রতিফলন ঘটায়। মুকেশ আম্বানি ও গৌতম আদানির মধ্যে প্রতিযোগিতা এবং রোশনি নাদারের ঐতিহাসিক সাফল্য ভারতের ব্যবসায়িক জগতের গতিশীলতার প্রমাণ।

Back to top button