ই-কমার্স কর্মীদের বেতন বাড়তে পারে ১০ শতাংশের বেশি, জানাচ্ছে আর্নস্ট অ্যান্ড ইয়ং-এর রিপোর্ট

চলতি বছরে দেশের বিভিন্ন শিল্পক্ষেত্রে বেতন বৃদ্ধির হার সামান্য কমলেও, ই-কমার্স বা অনলাইন বিপণন ক্ষেত্রের কর্মীদের জন্য সুখবর। উপদেষ্টা সংস্থা আর্নস্ট অ্যান্ড ইয়ং (ইওয়াই)-এর সাম্প্রতিক এক রিপোর্টে জানানো হয়েছে, এই বছর ই-কমার্স সংস্থাগুলির কর্মীদের বেতন গত বছরের তুলনায় ১০ শতাংশের বেশি বাড়তে পারে। শুধু তাই নয়, নতুন কর্মী নিয়োগের ক্ষেত্রেও এই ডিজিটাল কমার্স সংস্থাগুলি পিছপা হবে না বলেই রিপোর্টে দাবি করা হয়েছে।
ইওয়াই-এর পূর্বাভাস অনুযায়ী, সামগ্রিকভাবে চলতি বছরে ভারতে বেতন বৃদ্ধির হার ৯.৪ শতাংশ হতে পারে। যা ২০২৪ সালের ৯.৬ শতাংশের তুলনায় সামান্য কম, এবং বেতন বৃদ্ধিতে এক প্রকার মৃদু মন্দার ইঙ্গিত বহন করছে।
তবে এই চিত্রের ব্যতিক্রম হতে চলেছে দেশের ক্রমবর্ধমান ই-কমার্স ক্ষেত্র। ডিজিটাল বাণিজ্যের প্রসার, ক্রেতাদের অনলাইন কেনাকাটার আগ্রহ বৃদ্ধি এবং অত্যাধুনিক প্রযুক্তির ব্যবহারের কারণে এই শিল্পে কর্মীদের বেতন ১০ শতাংশের বেশি বৃদ্ধি পাওয়ার সম্ভাবনা রয়েছে।
রিপোর্টে আরও বলা হয়েছে, অটোমোটিভ, ফার্মাসিউটিক্যালস, ম্যানুফ্যাকচারিং এবং আর্থিক পরিষেবা ক্ষেত্রগুলিতেও গত কয়েক বছর ধরে স্থিতিশীল বেতন বৃদ্ধি দেখা যাচ্ছে। এই ক্ষেত্রগুলি তাদের মানবসম্পদে উল্লেখযোগ্য পরিমাণে বিনিয়োগ করছে, যা বিশ্ব বাজারে ভারতের অবস্থানকে আরও শক্তিশালী করছে বলে মনে করে উপদেষ্টা সংস্থাটি।
সামগ্রিকভাবে কর্মীদের বেতন কম বাড়লেও, মেধাবী এবং প্রতিভাধর কর্মীদের ধরে রাখতে দেশের সংস্থাগুলি কোনও রকম কার্পণ্য করবে না। রিপোর্টে দাবি করা হয়েছে, এই ধরনের কর্মীদের মোটা অঙ্কের ক্ষতিপূরণ (কম্পেনসেশন) দিতে পারে সংস্থাগুলি।
দক্ষ পেশাদার কর্মীর অভাব বর্তমানে সংস্থাগুলির সামনে একটি বড় চ্যালেঞ্জ হিসেবে উঠে এসেছে। যদিও ২০২৩ সালের তুলনায় ২০২৪ সালে দক্ষ কর্মীদের চাকরি ছেড়ে যাওয়ার হার সামান্য কমেছে (১৮.৩ শতাংশ থেকে ১৭.৫ শতাংশ)। তবে দেশের প্রায় ৮০ শতাংশ সংস্থাই শিক্ষিত এবং দক্ষ কর্মীর সন্ধান পেতে হিমশিম খাচ্ছে। তথ্যপ্রযুক্তি এবং এনার্জির মতো ক্ষেত্রগুলিতে এই সমস্যা আরও প্রকট, যেখানে কর্মীর চাহিদা আকাশছোঁয়া।
দক্ষ কর্মী নিয়োগ এবং তাদের ধরে রাখার জন্য উপযুক্ত পুরস্কার প্রদান ক্রমশ গুরুত্বপূর্ণ হয়ে উঠছে সংস্থাগুলির কাছে। কর্মীদের উন্নত কাজের পরিবেশ দেওয়ার লক্ষ্যে তাদের মানসিক ও শারীরিক স্বাস্থ্যের উপর বিশেষ জোর দিচ্ছে বিভিন্ন সংস্থা। সময়ের চাহিদা মেনে কর্মীদের কাজের সময়কে নমনীয় (ফ্লেক্সিবল) করা সহ বিভিন্ন সুবিধা প্রদান শুরু করেছে তারা। ইওয়াই-এর রিপোর্টে বলা হয়েছে, মূলত উন্নত কাজের পরিবেশ এবং কর্মীদের সন্তুষ্টি বৃদ্ধির জন্যই এই পদক্ষেপগুলি নেওয়া হচ্ছে।