পরিচালকের সঙ্গে মেয়ের প্রেম নিয়ে ছিল ঘোর আপত্তি, টানা তিন মাস শ্রুতির মুখ পর্যন্ত দেখেননি মা
দেশেরমাটির নোয়া ওরফে শ্রুতি দাস সোশ্যাল মিডিয়ায় বেশ সক্রিয় থাকেন প্রায় সময়। শ্রুতি প্রথম সুযোগ পান ‘ত্রিনয়নী’ তে আর তারপরেই দেশের মাটিতে নোয়া চরিত্রে অভিনয় করে কেড়ে নেন দর্শকদের মন আর এই দুটি ধারাবাহিকে অভিনয়ের মাধ্যমে বিনোদন জগতে বেশ স্যাম কুড়িয়েছেন অভিনেত্রী। এছাড়াও শ্রুতি তার ব্যক্তি গত জীবন সম্পর্কেও বেশ খোলামেলা। শ্রুতি টলিউডের প্রযোজক ও পরিচালক স্বর্ণেন্দুর সাথে তার সম্পর্কের কথা আড়াল করেননি। শ্রুতি সম্প্রতি স্বর্ণেন্দু ই তার সম্পর্কের বিষয় নিয়ে এক নতুন গল্প শেয়ার করলেন তার অনুরাগীদের জন্য। তিনি বিস্তারিত ভাবে জানিয়েছেন তার আর স্বর্ণেন্দুর মধ্যে সম্পর্কের কথা।
View this post on Instagram
শ্রুতি তার পোস্টে লিখেছেন, ‘সালটা দু’হাজার উনিশ শুরুর দিকটায়, ত্রিনয়নীর সেটে মায়ের প্রথম পা রাখা। ডিরেক্টর প্যাক-আপ বলার পর ওঁর সাথে আলাপ করিয়ে বলেছিলাম, ‘স্বর্ণদা, আমার মা’ লাজুক হাসি হেসে ঘাড় নেড়ে ‘ভালো আছেন কাকিমা?’ বলে উনি গাড়ি নিয়ে বেড়িয়ে যাওয়ার পর মা বলেছিল, ‘তোর ডিরেক্টর কিন্তু বেশ লম্বা, হ্যান্ডসাম, পারসোনালিটি-টাও বেশ। দেখিস প্রেমে পড়ে যাস না’। কথাটা তুচ্ছ হলেও দু’হাজার উনিশের জুলাই বা অগস্ট বোধ করি, বাবার মারফত মা জানতে পারে সেই লম্বা ডিরেক্টর সাহেবের প্রেমে তার মেয়ে আদতেই পড়েছে, সেই কথা সেপ্টেম্বরে মা জানার ওই যে মা ফিরে গেল কাটোয়া, তিন মাস মুখ দেখেনি আমার’।
অভিনেত্রী আরো লিখেছেন, ‘তখন ত্রিনয়নী শ্যুটিং চলছে আমার, ও করছিল বাঘবন্দি খেলা, সুন্দরবন আউটডোরে। এখানে আমি শ্যুটিংফ্লোরে অসুস্থ হওয়ায় কাছের কয়েকজন আমায় নিকটবর্তী হসপিটালে অ্যাডমিট করেন এবং এই খবর ওর কাছে গেলে ও আমায় না জিজ্ঞাসা করেই আমার মা কে ফোন করে বলেছিল, সমস্যা তো আমায় নিয়ে,মেয়েকে কেন কষ্ট দিচ্ছেন? ও আপনাকে ছাড়া ভালো নেই, ফিরে আসুন। পরে জেনেছিলাম, মা সেই যে ফোন কেটেছিল আর ফোন করেনি। যদিও মা বাবা পরে ফিরে এসেছিল’। মায়ের এই কাটোয়া-কলকাতা আসা যাওয়া, রোজ অশান্তি, অচেনা একজনের সাথে সম্পর্ক এই সেই নিয়ে অতিষ্ঠ হয়ে যাচ্ছিলাম। এমতাবস্থায় বাবা ওকে পরখ করে আমাকে বলে বসল ‘আমার উপর ভরসা রাখ, এই মা-ই একদিন স্বর্ণ স্বর্ণ করবে’। ওদিকে স্বর্নেন্দুও বলত ‘কাউকে কিচ্ছু করতে হবে না, কাকিমার কাছে আমি খুব তাড়াতাড়ি খুব আপন হয়ে যাব, ভরসা রাখো’।
View this post on Instagram
শ্রুতি আরও লিখেছেন, ‘সালটা দু’হাজার কুড়ি, সেপ্টেম্বর মাস। মায়ের ফোনে ওর নাম থাকত ‘এস’ নামে, ওর ফোনে মায়ের নাম থাকত ‘শ্রুতির মা’ নামে। লুকিয়ে লুকিয়ে চলত একে অপরের হোয়াটস্যাপের স্টেটাস দেখা। হঠাত দেখলাম মা স্বর্ণ নামজপ করছে দিনরাত, ও কি খেতে বেশি ভালোবাসে, কি জামা পছন্দ, কোন বেড়াতে যাওয়ার জায়গা প্রিয় এই সেই! আসতে আসতে বাড়তে থাকল একে অপরের ইন্ডিরেক্টলি খোঁজ নেওয়া, দেখা সাক্ষাত হওয়া, ওর ডিরেকশনের শো দেখে মেসেজ করা। কখন যেন সেই খাওয়া-দাওয়া ছেড়ে দেওয়া অভিমানী মা আমার হয়ে উঠল পরম প্রিয় শাশুড়ি। আজ এত কথা বলার একটাই কারন, আমরা শিল্প! সাজানো গোছানো ফ্যামিলি ফটোতে সবাইকে হাসিমুখে দেখিয়ে বোঝাতে চাই, আমরা ভালো আছি আপনিও ভালো থাকুন। কিন্তু এই ভালো থাকার পিছনের দুর্গম পথের সাক্ষী কেউ ছিল না (বাড়ির কয়েকজন আর কাছের দু একজন বন্ধু ছাড়া)। আজ দুজন’কে বন্ধুর মতো মিশতে দেখে অজান্তেই চোখে আমার জল আসে কারন এই লড়াই একান্ত আমার একার লড়াই। আর এই সাফল্য একান্ত আমার ব্যক্তিগত। তবে আমার বাবা আর কাছের কয়েকজন বন্ধুর অবদান অনস্বীকার্য। আজ শুধু শাশুড়ি-জামাই এর দিন। শুধু একটাই আফসোস, দুজনেই একে অপরকে এত লজ্জা পায় মাঝে মাঝে, মনে হয় ১৮০০ শতাব্দীর শাশুড়ি-জামাই’।