বিনোদন

‘মহাপীঠ তারাপীঠ’-এর বিরুদ্ধে গুরুতর অভিযোগ, মানুষকে দেখানো হচ্ছে ভুল ইতিহাস, উঠলো ধারাবাহিক বন্ধের দাবি

ফের বাংলার টেলিভিশনের জনপ্রিয় সিরিয়াল নিয়ে বেঁধে গেলো বিতর্ক। “করুণাময়ী রানী রাসমণি” সিরিয়ালের পর এবার ফের ইতিহাস বিকৃত করার অভিযোগ উঠলো “মহাপীঠ তারাপীঠ” (Mahapeeth Tarapeeth) ধারাবাহিক নির্মাতাদের বিরুধ্যে। সাবর্ণ রায় চৌধুরী পরিবার ফের অভিযোগ তুললো পৌরাণিক বাংলার ইতিহাস বিকৃতি নিয়ে। তারা ‘সাধক বামাখ্যাপা’ প্রসঙ্গে ভুল তথ্য পরিবেশন করা হচ্ছে ও দেখানো হচ্ছে বুজরুকি বলে অভিযোগ দায়ের করেছেন সেই সাথে সিরিয়াল বন্ধের দাবি জানিয়েছে তারা।

প্রসঙ্গত, বাংলার ঐতিহাসিক এক জমিদারত পরিবার হলো সাবর্ণদের পরিবার।তাদের নখদর্পনে রয়েছে সতীপীঠ, কালিঘাট তারাপীঠের মতো মন্দির গুলি। তাই যখন চ্যানেল কর্তৃপক্ষ সিরিয়ালের মধ্যে বুজরুকি ও অতিনাটকীয়তা দেখতে গিয়ে বুজরুকি ও ভণ্ডামো দেখতে শুরু করে তখন তারা তা ধরে ফেলে নিমেষের মধ্যেই ও তা নিয়ে তারা প্রতিবাদ করেন। তাই এবার দেখে নেওয়া যাক আসলে কি অভিযোগ করেছে এই বিখ্যাত জমিদার পরিবার।

সাবর্ণ রায় চৌধুরী পরিবার দাবি করে জানিয়েছে “সাধক বামাক্ষ্যাপা এমন এক লগ্নে জন্মগ্রহণ করেন যখন সারা দেশজুড়ে এক নবজাগরণ চলছে। রাজা রামমোহন রায়ের উদ্যোগে সতীদাহ প্রথা রদ, ইশ্বরচন্দ্র বিদ্যাসাগরের উদ্যোগে বিধবা বিবাহ আইন পাশ, শিকাগোতে স্বামী বিবেকানন্দের বক্তৃতা, বঙ্গভঙ্গ আন্দোলন থেকে শুরু করে রবীন্দ্রনাথ ঠাকুর, সুভাষচন্দ্র বসু, বঙ্কিমচন্দ্র চট্টোপাধ্যায়ের সমকালীন ছিলেন সাধক বামাক্ষ্যাপা। তিনি আজীবন কুসংস্কারের বিরুদ্ধে লড়েছেন, নবজাগরণের পথিকৃৎ বলা যায় তাকে। আর ধারাবাহিকের নির্মাতারা কিনা তার নামের আড়ালেই লোকসমাজে কুসংস্কার ছড়ানোর কাজ করছেন!”

সাবর্ণ রায়চৌধুরী পরিবার পরিষদের সম্পাদক শ্রী দেবর্ষি রায়চৌধুরী বলেন “যে কুসংস্কারের বিরুদ্ধে বাংলার মনীষীরা লড়েছিলেন, তাদের প্রত্যেককে অপমান করা হচ্ছে এই মহাপীঠ তারাপীঠ সিরিয়ালে”! তার দাবি, বামাক্ষ্যাপা শুধু সাধক কিংবা তান্ত্রিক কখনোই ছিলেন। ধারাবাহিকে যে প্রতিনিয়ত তন্ত্র, মন্ত্র, ভুত-প্রেত, দৈত্য, এমনকি নাগরাজকে পর্যন্ত টেনে আনা হচ্ছে, তার সাথে বাস্তব ইতিহাসের কোনও সম্পর্ক নেই বলেই দাবি করা হচ্ছে।

রায় চৌধুরী পরিবার দাবি করে জানিয়েছে যে বামাক্ষ্যাপা একদম বেশি প্রাচীন যুগের মানুষ ছিলেন না যে তিনি সব কাজ করবেন শুধু দৈবশক্তি প্রয়োগ করে। সিরিয়ালে যা দেখানো হচ্ছে তা কমপক্ষে ৪ হাজার বছরের পুরোনো ধ্যান ধারণা ছাড়া কিছুই নয় বলে মনে করছেন সাবর্ণরা। কারণ ধারাবাহিকের চিত্র নাট্যে দেখানো হচ্ছে যে ১৫০ বছর আগে দৈত্যরা এসে ধ্বংস করে দিয়ে যাচ্ছে তারাপীঠ! নাটোরের রাজা কে বাঁচাতে পাঠনো হচ্ছে জলের তলায় নাগরাজের কাছে ! এই ঘটনার উপযুক্ত প্রমানের দাবি জানিয়েছে বাংলার বিখ্যাত এই জপমিদার পরিবার।

তারা আরও দাবি করে জানিয়েছে “বামাক্ষ্যাপা ছিলেন কালী সাধক। তিনি নিজের মধ্যেই সাধনা করতেন। তিনি অন্ততপক্ষে কখনোই তন্ত্র-মন্ত্রের আড়ালে কুসংস্কার এবং বুজরুকিকে প্রশ্রয় দেননি। তবে “মহাপীঠ তারাপীঠ” ধারাবাহিকের নির্মাতারা কার্যত বামাক্ষ্যাপার আড়ালে বর্তমান প্রজন্মের কাছে ভুল তথ্য ছড়াচ্ছেন। ইচ্ছাকৃতভাবেই দর্শকের মনে কুসংস্কারগুলিকে ঢুকিয়ে দেওয়ার চেষ্টা চলছে! তাই ধারাবাহিকে এমন ভুয়ো তথ্য পরিবেশন অবিলম্বে বন্ধ হওয়া উচিত”

তথ্য সূত্র: ইঁচড়ে পাকা

Back to top button