আন্তর্জাতিকনিউজ

নেপালে রাজতন্ত্র ফেরানোর দাবিতে তুমুল অশান্তি, আন্দোলনকারীদের কড়া হুঁশিয়ারি সরকারের

পালে রাজতন্ত্র ফেরানোর দাবিতে আন্দোলন ক্রমশ জোরালো হচ্ছে। গত শুক্রবার আন্দোলনকে কেন্দ্র করে ব্যাপক উত্তেজনা ছড়িয়ে পড়লে পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আনতে এবার রাজতন্ত্রের দাবিদারদের কড়া হুঁশিয়ারি দিয়েছে কে পি শর্মা ওলির নেতৃত্বাধীন কমিউনিস্ট সরকার। সরকার আগামী ৩ এপ্রিল পর্যন্ত সময়সীমা বেঁধে দিয়েছে এবং এর মধ্যে অশান্তি বন্ধ না হলে কঠোর পদক্ষেপ নেওয়া হবে বলে জানানো হয়েছে।

২০০৮ সালে নেপালে দীর্ঘ ২৩৯ বছরের রাজতন্ত্রের অবসান ঘটে এবং দেশটি ধর্মনিরপেক্ষ রাষ্ট্রে পরিণত হয়। তবে, মাত্র ১৫-১৬ বছর যেতে না যেতেই নেপালের জনগণের একাংশ কমিউনিস্ট সরকারের বিদায় চেয়ে ফের শতাব্দী প্রাচীন রাজতন্ত্র প্রতিষ্ঠার দাবিতে রাস্তায় নেমেছেন। এই আন্দোলন গত শুক্রবার চরম আকার ধারণ করে। বিক্ষোভকারীদের ছত্রভঙ্গ করতে গেলে পুলিশের সঙ্গে উত্তেজিত জনতার ব্যাপক সংঘর্ষ হয়।

এদিকে, বিক্ষোভের পর নেপালের ওলি সরকার প্রাক্তন রাজা জ্ঞানেন্দ্র শাহের বিরুদ্ধেও কঠোর পদক্ষেপ নিয়েছে। সম্প্রতি জ্ঞানেন্দ্র শাহ দেশের বিভিন্ন প্রান্তে সফর করেন এবং গত ফেব্রুয়ারিতে আকস্মিকভাবে জনগণের সমর্থন চান, যা ভালোভাবে নেয়নি কমিউনিস্ট সরকার। এরপর থেকেই তার উপর নজরদারি বাড়ানো হয়।

শুক্রবারের হিংসাত্মক ঘটনার পর প্রাক্তন রাজা জ্ঞানেন্দ্র শাহের নিরাপত্তা ব্যবস্থায় বড়সড় পরিবর্তন আনা হয়েছে। এতদিন সরকার তাঁকে ২৫ জন দেহরক্ষী প্রদান করত, যা কমিয়ে ১৬ জনে নামিয়ে আনা হয়েছে।

শুধু তাই নয়, কাঠমান্ডু পুরসভা শুক্রবারের সংঘর্ষে সরকারি সম্পত্তির যে ক্ষয়ক্ষতি হয়েছে, তার মাশুল রাজা জ্ঞানেন্দ্র শাহকে দিতে হবে বলে জানিয়েছে। তাঁকে নেপালি মুদ্রায় ৭.৯৩ লাখ টাকা জরিমানা করা হয়েছে। বিক্ষোভ আন্দোলনে ক্ষতিগ্রস্ত সরকারি সম্পত্তির মূল্যও তাঁর কাছ থেকে আদায় করা হবে বলে জানানো হয়েছে। সরকারের এই পদক্ষেপ আন্দোলনকারীদের মধ্যে আরও ক্ষোভের সৃষ্টি করেছে।

শুক্রবারের সংঘর্ষে বিক্ষোভকারীরা বহু সরকারি সম্পত্তি ভাঙচুর করে এবং বিভিন্ন স্থানে অগ্নিসংযোগ করে। সরকারি দফতর, বিল্ডিং এবং সরকারি গাড়িও ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে। পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আনতে প্রশাসনকে যথেষ্ট বেগ পেতে হয়।

নেপালের স্বরাষ্ট্র মন্ত্রক জানিয়েছে, এই हिंसाয় জড়িতদের বিরুদ্ধে কঠোর আইনি ব্যবস্থা নেওয়া হবে। ছবি, ভিডিও ফুটেজ এবং গোয়েন্দা তথ্যের ভিত্তিতে বিক্ষোভকারীদের চিহ্নিত করে গ্রেফতার করা হচ্ছে। সরকার স্পষ্ট বার্তা দিয়েছে যে, আগামী ৩ এপ্রিলের মধ্যে যদি এই ধরনের অশান্তি বন্ধ না হয়, তাহলে আরও কঠোর পদক্ষেপ নেওয়া হবে।

Back to top button