নিউজরাজ্য

“তন্ত্র-মন্ত্রেই সারবে ক্যান্সার..!”-বিশ্বাসে তান্ত্রিককে সোনার বালা দিয়ে সর্বস্বান্ত পরিবার, পলাতক অভিযুক্ত

মুর্শিদাবাদের হরিহরপাড়ার ভজরামপুর গ্রামে এক তান্ত্রিকের প্রতারণার ঘটনায় চাঞ্চল্য ছড়িয়েছে। স্থানীয় সূত্রে জানা গেছে, গ্রামের বাসিন্দা দিলীপ মণ্ডলের বাড়িতে এক ব্যক্তি তান্ত্রিকের বেশে এসে দাবি করেন যে তিনি ক্যান্সার রোগ সারিয়ে দিতে পারেন। তবে তার জন্য প্রয়োজন সোনার বালা। তান্ত্রিকটি আরও জানান, দিলীপ মণ্ডলের ওপর নাকি ‘বান মারা’ হয়েছে এবং সেটি দূর করতে একটি বিশেষ পূজার প্রক্রিয়া প্রয়োজন। সেই প্রক্রিয়ায় মরা মানুষের মাথা থেকে সিঁদুর এনে দিলীপবাবুর মাথা ও হাত-পায়ে মাখাতে হবে, আর তার জন্য দরকার সোনার বালা। ভালো হওয়ার আশায় দিলীপ মণ্ডলের স্ত্রী তাঁর সোনার বালা ওই তান্ত্রিকের হাতে তুলে দেন।

প্রতারণার ছক

স্থানীয়রা জানান, তান্ত্রিকটি দাবি করেছিলেন যে সোনার বালা দিয়ে পূজো করলেই দিলীপ মণ্ডলের ক্যান্সার ভালো হয়ে যাবে। এই কথায় বিশ্বাস করে দিলীপবাবুর স্ত্রী বালাটি দিয়ে দেন। কিন্তু পূজোর নামে মন্দিরে যাওয়ার কথা বলে তান্ত্রিকটি সোনার বালা নিয়ে চম্পট দেয়। এরপর থেকে তার আর কোনও খোঁজ পাওয়া যায়নি। এই ঘটনায় দিলীপ মণ্ডলের পরিবার সর্বস্বান্ত হয়ে পড়েছে।

এলাকায় চাঞ্চল্য

ঘটনাটি জানাজানি হওয়ার পর ভজরামপুর গ্রামে ব্যাপক উত্তেজনা ছড়িয়ে পড়ে। এক স্থানীয় বাসিন্দা বলেন, “এটা খুবই দুঃখজনক। আমরা থানায় লিখিত অভিযোগ দায়ের করব। প্রশাসনের কাছে আমাদের দাবি, এই প্রতারককে খুঁজে বের করে শাস্তি দেওয়া হোক।” এলাকাবাসীর অভিযোগ, এই ধরনের প্রতারণার ঘটনা এই প্রথম নয়। কিছুদিন আগেও হরিহরপাড়ার শ্রীপুর এলাকায় সন্তান লাভের আশায় এক মহিলা তান্ত্রিকের কাছে সোনার দুল ও নগদ ৫০০ টাকা হারিয়েছেন।

পুলিশের ভূমিকা প্রত্যাশিত

এই ঘটনায় এলাকার মানুষ প্রশাসনের দ্রুত হস্তক্ষেপ কামনা করছেন। স্থানীয়রা মনে করছেন, এ ধরনের প্রতারকদের কঠোর শাস্তি না হলে এলাকায় এই ধরনের ঘটনা বাড়তেই থাকবে। পুলিশ এখনও পর্যন্ত এই বিষয়ে কোনও আনুষ্ঠানিক মন্তব্য করেনি। তবে অভিযোগ দায়ের হলে তদন্ত শুরু হবে বলে আশা করা হচ্ছে।

এই ঘটনা আবারও প্রমাণ করে যে, অসুস্থতার সুযোগ নিয়ে কীভাবে কিছু অসাধু ব্যক্তি মানুষের বিশ্বাসের সঙ্গে খেলে তাদের সর্বস্বান্ত করে দেয়।

Back to top button