নিউজরাজ্য

বাল্যবিবাহ রোধে অভিনব উদ্যোগ, বীরভূমের সমস্ত স্কুলে বাজানো হবে ঘণ্টা, প্রচার হবে নাটক

বাল্যবিবাহ রুখতে বীরভূমে অভিনব উদ্যোগ: স্কুলে ঘণ্টাধ্বনী ও নাটকের মাধ্যমে সচেতনতা
বীরভূম, ২৫ মার্চ ২০২৫: ২০২৫ সালে এসেও বাল্যবিবাহের মতো সামাজিক সমস্যা এখনও বিদ্যমান। বীরভূম জেলায় এই কুপ্রথা রুখতে এবার অভিনব উদ্যোগ নিয়েছে জেলা প্রশাসন। স্কুলগুলিকে কেন্দ্র করে শুরু হচ্ছে এক বিশেষ কর্মসূচি। জেলার সব স্কুলে একযোগে বাজবে ঘণ্টা, ছাত্রছাত্রীদের কণ্ঠে উঠবে স্লোগান এবং মঞ্চস্থ হবে সচেতনতামূলক নাটক।

২৬ মার্চের বিশেষ কর্মসূচি

আগামী ২৬ মার্চ, দুপুর ১২টায় বীরভূম জেলার সমস্ত উচ্চ প্রাথমিক, উচ্চ বিদ্যালয়, উচ্চ মাধ্যমিক বিদ্যালয় এবং মাধ্যমিক শিক্ষা কেন্দ্রে একসঙ্গে ঘণ্টাধ্বনী বাজবে। এর সঙ্গে ছাত্রছাত্রীরা একযোগে স্লোগান তুলবে— ‘বাল্যবিবাহ বন্ধ কর, শিশুর ভবিষ্যৎ বাঁচাও’। এরপর দুপুর ১২টা ১০ মিনিটে স্কুলগুলিতে মঞ্চস্থ হবে ‘নারী নক্ষত্র’ নামে একটি নাটক। ছাত্রছাত্রীরাই এই নাটকে অভিনয় করবে, তাও ‘Low Cost’ বা ‘No Cost’ পদ্ধতিতে, যাতে সচেতনতার বার্তা সহজে ছড়িয়ে পড়ে।

জেলাশাসকের বার্তা

এই কর্মসূচি প্রসঙ্গে জেলাশাসক বিধান রায় বলেন, “বীরভূমে বাল্যবিবাহ একটি সংকটজনক সমস্যা হয়ে দাঁড়িয়েছে। এটি রুখতে প্রশাসন, পুলিশ, বিচার বিভাগ এবং শিক্ষা দফতর একযোগে কাজ করছে। আমরা চাই এই উদ্যোগের মাধ্যমে সমাজের প্রতিটি স্তরে সচেতনতা পৌঁছে যাক।”

অভিভাবকদের সঙ্গে বৈঠক

২৬ মার্চ সকাল ১১টা ৩০ মিনিটে জেলার প্রতিটি স্কুলে অভিভাবকদের নিয়ে একটি বিশেষ বৈঠকের আয়োজন করা হয়েছে। এই বৈঠকে বাল্যবিবাহ রোধে বিভিন্ন কর্মসূচি ও এর ক্ষতিকর দিক নিয়ে আলোচনা হবে। অভিভাবকদের সচেতন করার মাধ্যমে এই সমস্যার মূলে আঘাত হানাই প্রশাসনের লক্ষ্য।

বিধায়কের অংশগ্রহণ

এই সচেতনতা অভিযানে বীরভূমের সুরির বিধায়কও অংশ নিচ্ছেন। তাঁর উপস্থিতি এই উদ্যোগকে আরও গতি দেবে বলে মনে করছে প্রশাসন। স্কুলের ছাত্রছাত্রী, শিক্ষক এবং অভিভাবকদের মধ্যে বাল্যবিবাহের বিরুদ্ধে সচেতনতা বৃদ্ধি করাই এই কর্মসূচির মূল উদ্দেশ্য।

সমাজে সচেতনতার বার্তা

জেলা প্রশাসনের এই উদ্যোগের মাধ্যমে বাল্যবিবাহ এবং বাল্যশ্রমের বিরুদ্ধে একটি শক্তিশালী বার্তা দেওয়া হচ্ছে। ঘণ্টাধ্বনী, স্লোগান এবং নাটকের মাধ্যমে কিশোর-কিশোরীদের পাশাপাশি অভিভাবকদের মধ্যেও সচেতনতা ছড়িয়ে পড়বে বলে আশাবাদী প্রশাসন। এই সম্মিলিত প্রয়াস শিশুদের ভবিষ্যৎ রক্ষায় একটি বড় পদক্ষেপ হয়ে উঠবে বলে মনে করা হচ্ছে।

Back to top button