অর্থনীতিলাইফস্টাইল

পেট্রোল পাম্পে কি কম তেল দিচ্ছে? তাহলে নজর রাখুন এই ৫টি বিষয়

আকাশছোঁয়া পেট্রোল, ডিজেলের দাম প্রভাব ফেলছে মধ্যবিত্তদের ভাঁড়ারেও। কারণ, তেলের দাম বাড়লে তার প্রভাবে দাম বাড়ে চাল, ডাল, শাক-সবজি, মশলাপাতিতেও। এই পরিস্থিতিতেও কিছু অসাধু পেট্রোল পাম্প কর্মচারি বা মালিক নানা কৌশলে তেলের পরিমাণে কারচুপি করে মানুষকে ঠকান। ঠিক কী ভাবে ওই সমস্ত অসাধু পেট্রোল পাম্পগুলি তেল চুরি করছে, তা ঝটপট, খালি চোখে বোঝা সম্ভব নয়। তবে পেট্রোল পাম্পগুলির তেল চুরির কয়েকটি নির্দিষ্ট কৌশল রয়েছে, যেগুলি সম্পর্কে অবগত থাকলে প্রতারিত হওয়ার ঝুঁকিটা কম থাকে। আসুন এ বিষয়ে সবিস্তারে জেনে নেওয়া যাক…

ভেজালে নাম দেশের নামী ব্র্যান্ডেরও! মধু খাঁটি কিনা জেনে নিন এই ৫ কৌশলে

১) অনেক অসাধু পেট্রোল পাম্প মালিক তেল ভরার জন্য প্রয়োজনের তুলনায় বেশ কিছুটা লম্বা পাইপের ব্যবহার করে থাকেন। এই পদ্ধতিতে তেল ভরার সময় নিখুঁত মিটার রিডিংকে ফাঁকি দিয়েও ক্রেতাকে কম তেল দিয়ে ঠকানো যায় সহজেই। কারণ, মিটারে যদি দেখায় যে, এক লিটার তেল দেওয়া হয়ে গিয়েছে, সে ক্ষেত্রে তখনও বেশ কিছুটা তেল ওই লম্বা পাইপেই থেকে যাবে। আসলে এক লিটারে ৫০ থেকে ৬০ মিলিলিটার তেল কম দিলেও কেউ খেয়াল করবে না। তবে ভেবে দেখেছেন কি, এমনটা সারাদিনে ১০০ জনের সঙ্গে হলে ওই পেট্রোল পাম্প মোট কত লিটার তেল চুরি করছে সেটা ভেবে দেখেছেন? তাই ১.৪৫ লিটার বা ৩.৫৬ লিটার বা ১২০ টাকা, ১৩৫ টাকা— এমন হিসাবে তেল ভরানোর চেষ্টা করুন।

২) ধরুন যদি ৫০০ টাকার তেল ভরাবেন বললেন। এ দিকে পেট্রোল পাম্পের কর্মচারি আপনার কথা না শোনার ভান করে ২০০ টাকায় বন্ধ করে দিল। আপনি যখন বলবেন, ‘আমি তো ৫০০ টাকার ভরাবো বলেছি’, তখন পাম্পের ওই কর্মচারি আবার মিটারে ২০০ টাকার তেলের রিডিং ডিলিট না করেই তাতে ৩০০ টাকা এন্টার করে আপনার বাইক বা গাড়িতে তেল ভরে দেবে। এটা দেখে মনে হতেই পারে যে, আপনাকে মোট ৫০০ (২০০ + ৩০০) টাকার তেলই ভরা হয়েছে। কিন্তু এটাই একটা কারসাজি! আপনার সঙ্গে এমন হলে পেট্রোল পাম্পের কর্মচারিকে বলুন মিটার রিডিং নতুন করে শুরু করে ৩০০ টাকার তেল ফের ভরে দিতে।

৩) যদি দেখেন, কর্মচারী বারবার ফিলিং পাইপের সুইচ নামিয়ে ফেলছে, ব্যপারটাকে মোটেই অবহেলা করবেন না। এই ভাবে বারবার ফিলিং পাইপের সুইচ অফ হয়ে যাওয়ার ফলে আপনি আপনার ন্যায্য মূল্যের তেল কখনওই পাবেন না। মিটার রিডিং-এ এই ধরনের কারচুপি ধরা পড়ে না। তাই তেল নেওয়ার সময় কর্মচারীকে বলবেন, সে যেন ট্যাংকে পাইপ ঢোকানোর সময়েই মেশিনের ফিলিং পাইপ অন করে।

৪) কিছু অসাধু পেট্রোল পাম্পের মালিক অনেক সময় পেট্রোলের সঙ্গে ন্যাপথা (যা পেট্রোলেরই উপজাত দ্রব্য) মিশিয়ে ক্রেতাকে ভেজাল তেল দিয়ে ঠকিয়ে থাকেন। পেট্রোল আর ন্যাপথার ঘনত্ব একই রকম হওয়ায় অনেক ক্ষেত্রেই কারসাজি ধরা পড়ে না। তবে এই ধরনের কারসাজি সাধারণ ক্রেতার পক্ষে কোনও ভাবেই বোঝা সম্ভব নয়।

৫) অসাধু পেট্রোল পাম্পে অনেক সময় ইলেকট্রনিক চিপ লাগিয়েও চুরি করে তেল। মিটারের সঙ্গে ইলেকট্রনিক চিপ লাগিয়ে মিটার রিডিং ইচ্ছে মতো বাড়িয়ে দেওয়া যায়। কিন্তু এ ক্ষেত্রে তেল সেই পরিমাণে ট্যাঙ্কে পড়ে না। তাই যদি কখনও কোনও পেট্রোল পাম্পের সম্পর্কে মনে সন্দেহ দানা বাঁধে, তাহলে দুটি ১ লিটারের জলের বোতল নিয়ে তাতে তেল ভরে নিয়ে আসুন।

Back to top button