বিনোদন

প্রসেনজিৎ না বলে দিয়েছিলেন প্রথমে, ‘গুরুদক্ষিণা’-য় নায়ক হয়েছিলেন তাপস পাল, সুপারহিট হয় সিনেমা

ইদানিং মাঝে মাঝেই বহু নামী ইউটিউবারদের দেখা যায়, অঞ্জন চৌধুরী (Anjan Chowdhury)-র ফিল্ম নিয়ে ‘রোস্ট’ করতে। কিন্তু অনেকেই হয়তো জানেন না মহানায়ক উত্তম কুমার (Uttam Kumar) পরবর্তী বাংলা ফিল্ম ইন্ডাস্ট্রির কান্ডারী হলেন অঞ্জন চৌধুরী। তাঁর হাত ধরেই বাংলা সিনেমা অন্ধকার থেকে আলোয় এসেছে। কলাকূশলীরা বেঁচেছেন না খেয়ে মরার হাত থেকে। ইন্ডাস্ট্রিতে কর্মসংস্থান হয়েছে। 25 শে নভেম্বর তাঁর জন্মদিনে বহু তারকাই তাঁর স্মৃতিচারণ করেছেন। কেউ বা তাঁর বন্ধু, কেউ অনুগামী। তালিকায় রয়েছেন অভিষেক চ্যাটার্জী (Abhishek Chatterjee)। অঞ্জনের হাত ধরেই নায়ক হিসাবে ঘটেছিল তাঁর আত্মপ্রকাশ।

ফিল্মের নাম ছিল ‘গীত-সংগীত’। ইন্ডাস্ট্রির নায়কদের ডেকে অঞ্জন বলেছিলেন, তিনি নিজের দুই মেয়েকে নায়িকা করে একটি ফিল্ম বানাতে চলেছেন যার নাম ‘গীত-সংগীত’। নেওয়া হল সকলের অডিশন। কিন্তু সিলেকশন হল অভিষেকের। সুভাষ সেন (Subhash Sen) পরিচালক হলেও পুরো ফরম্যাট ছিল অঞ্জন চৌধুরীর তৈরি। ফিল্মটি সুপারহিট হয়েছিল। অভিষেকের এরপরের মাইলস্টোন ছিল অঞ্জন চৌধুরীর ‘বাঙালিবাবু’। তাতে অভিষেকের সঙ্গে অভিনয় করেছিলেন মিঠুন চক্রবর্তী (Mithun Chakraborty)। এই ফিল্মের শুটিং চলাকালীন অভিষেকের খুব বড় দুর্ঘটনা হয়েছিল। একটি ফাইট সিকোয়েন্সে অভিনয় করতে গিয়ে ওই দুর্ঘটনা ঘটে। কিন্তু অঞ্জন চৌধুরীর চিত্রনাট্যের গুণে ফিল্ম সুপারহিট হয়েছিল।

পরিচালক ও চিত্রনাট্যকারের অদ্ভুত সংমিশ্রণ ছিলেন অঞ্জন। তাঁর সঙ্গে অভিষেকের বরাবর ভালো সম্পর্ক ছিল। বন্ধুত্ব রয়েছে তাঁর মেয়ে চুমকি (Chumki Chowdhury) ও চুমকির স্বামী সজল (Sajal)-এর সঙ্গেও। যতদিন অভিষেক যাত্রা করেছেন, তাঁর স্ক্রিপ্ট লিখেছেন সজল। তবে অঞ্জনকে কেউ প্রত্যাখ্যান করলে তাঁর ইগোয় বাধত। তাঁর পরিচালিত ‘শত্রু’ ইন্ডাস্ট্রির মোড় ঘুরিয়ে দিয়েছিল। ‘গুরুদক্ষিণা’ ফিল্মে নায়কের চরিত্রে তিনি প্রসেনজিৎ (Prosenjit Chatterjee)-কে প্রস্তাব দিলে প্রসেনজিৎ প্রচুর টাকা চেয়েছিলেন। কিন্তু অঞ্জন দুটি ফিল্ম তাঁকে অফার করে টাকার অঙ্ক কমাতে বললে তিনি রাজি হননি। এরপর অঞ্জন ‘গুরুদক্ষিণা’ ও অপর একটি ফিল্মে তাপস পাল (Tapas Pal)-কে সাইন করিয়েছিলেন। প্রসেনজিৎ-এর সঙ্গে তিনি দশ বছর কাজ করেননি।

অভিষেককে বলেছিলেন, রোল পছন্দ না হলে তাঁকে বললে তিনি ঠিকঠাক করে দেবেন। কিন্তু তাঁকে যেন ‘না’ শুনতে না হয়। অভিমানী মানুষ ছিলেন অঞ্জন। চুমকির সঙ্গে অনেকগুলি ফিল্মে কাজ করেছেন অভিষেক। তিনিও তাঁর বাবার মতোই ডাউন টু আর্থ। অঞ্জন চৌধুরীর মেয়ে বলে তিনি কোনোদিন অহঙ্কার করেননি। ‘গীত-সংগীত’-এ নায়ক হওয়ার পর ‘আব্বাজান’ ফিল্মে ছোট চরিত্রে অভিষেকের সিলেকশন করেছিলেন অঞ্জন। অভিষেকের পছন্দ হয়নি। তিনি অঞ্জনকে তা জানালে তিনি বলেছিলেন, তাঁর ছোট মেয়ে বুকাই এই ফিল্মে অভিনয় করবেন। ফলে অভিষেককে তাঁর দরকার। কেটে যাবে আরও একটা 25 শে নভেম্বর। কিন্তু টলিউড স্মৃতি রোমন্থন করবে অঞ্জন চৌধুরীর।

Back to top button