সুচিত্রা সেন ফিরিয়ে দিয়েছিলেন রাজ কাপুরকেও! জেনেনিন মহানায়িকার জীবনের অজানা তথ্য গুলি
তিনি বরাবরের রহস্য, চিরকালের আকর্ষণ। নিছক নায়িকা হয়েই থেকে যাননি। তার কাজ ও কাজের সঙ্গে বিজড়িত তার অনন্য ব্যক্তিত্বের নানা পরত, নানা ইতিহাস আজও মুগ্ধ করে মানুষকে। তিনি মহানায়িকা সুচিত্রা সেন। আজ, ৬ এপ্রিল তার জন্মদিন। ১৯৩১ সালের এই দিনে বাংলাদেশের পাবনায় জন্ম গ্রহণ করেছিলেন এই শিল্পী।
মাত্র ২১ বছর বয়সে ১৯৫২ সালে চলচ্চিত্রজগতে পা রাখেন তিনি। তার প্রথম ছবির নাম ছিল ‘শেষ কোথায়’। যদিও ছবিটি মুক্তি পায়নি। তার প্রথম মুক্তিপ্রাপ্ত ছবি ‘সাত নম্বর কয়েদি’। ছবিটি মুক্তি পেয়েছিল এর পরের বছর ১৯৫৩ সালে। দেখতে গেলে এটিই তার প্রথম ছবি।
১৯৬৩ সালে ‘সাত পাকে বাঁধা’ চলচ্চিত্রে অভিনয়ের জন্য মস্কো চলচ্চিত্র উৎসবে সুচিত্রা ‘শ্রেষ্ঠ অভিনেত্রী’র শিরোপা জেতেন। তিনিই প্রথম ভারতীয় অভিনেত্রী যিনি কোনো আন্তর্জাতিক চলচ্চিত্র উৎসবে পুরস্কৃত হয়েছিলেন। ১৯৫৫ সালের ‘দেবদাস’ ছবির জন্য সুচিত্রা শ্রেষ্ঠ অভিনেত্রীর পুরস্কার জিতেছিলেন, যা ছিল তার প্রথম হিন্দি ছবি। শোনা যায়, দিলীপকুমার সুচিত্রার সঙ্গে ‘দেবদাস’ ছবিতে কাজ করতে গিয়ে তার ব্যক্তিত্বে মুগ্ধ হয়েছিলেন। দিলীপকুমার নাকি সুচিত্রার বাংলা অ্যাকসেন্টে হিন্দি উচ্চারণও খুব পছন্দ করতেন!
সুচিত্রার ব্যক্তিত্ব যে অসাধারণ ছিল তা একটি ঘটনাতেই বোঝা যায়। তিনি রাজ কাপুরের প্রস্তাব ফিরিয়ে দিয়েছিলেন। রাজ কাপুর সুচিত্রাকে লিড রোল অফার করে তার বাড়িতে এসেছিলেন। সঙ্গে এনেছিলেন ফুলের স্তবক। সুচিত্রা ঘরে ঢুকে চেয়ারে বসতেই রাজ কাপুর মাটিতে সুচিত্রার পায়ের কাছে বসে তাকে পুস্পস্তবক দেন এবং তার ছবিতে কাজের প্রস্তাব দেন। বিষয়টি আগাগোড়া ভালো লাগেনি সুচিত্রার। তিনি চাননি, কোনো পুরুষের ব্যক্তিত্ব এত ঠুনকো হোক। তিনি নাকি পত্রপাঠ বিদায় করে দিয়েছিলেন রাজ কাপুরকে।
উত্তম কুমারের সঙ্গে সুচিত্রার জুড়ি বাংলা তথা ভারতীয় ছবিতে কিংবদন্তিতে পরিণত হলেও ঘটনাচক্রে সুচিত্রার জীবনের শেষ ছবি সৌমিত্র চট্টোপাধ্যায়ের সঙ্গে। ‘প্রণয় পাশা’। মুক্তি পেয়েছিল ১৯৭৮ সালে। এর তিন বছর আগেই তিনি উত্তমের সঙ্গে তার শেষ ছবিটি করে- ‘প্রিয় বান্ধবী’। ১৯৮০ সালে উত্তমের মৃত্যু। এর মধ্যে আর এদের একসঙ্গে কাজ করা হয়ে ওঠেনি!