‘অভিনেতা -অভিনেত্রী মিলে অভিষেকের কেরিয়ার ধ্বংস করেছেন’, কাদের উদ্যেশে অভিযোগ পত্নী সংযুক্তার!
এক সপ্তাহের উপর হয়ে গেল, চলে গিয়েছেন অভিষেক চট্টোপাধ্যায় (Abhishek Chatterjee)। তারপর থেকেই বারবার সকলের স্মৃতিচারণে উঠে এসেছে তাঁর কথা। অনেকেই বলতে শুরু করেছেন টলিউডের কয়েকজন সেলিব্রিটি নাকি অভিষেকের পরিবারকে আর্থিক সাহায্য করছেন। অভিষেকের শ্রাদ্ধানুষ্ঠানের দিন এই বিষয়ে ক্ষোভ উগড়ে দিলেন অভিষেকের স্ত্রী অলকা ওরফে সংযুক্তা চট্টোপাধ্যায় (Sanjukta Chatterjee)।
অভিষেকের মৃত্যুর পর থেকেই গুজব রটেছিল, তাঁর পরিবার যথেষ্ট আর্থিক সমস্যার মধ্যে রয়েছেন। অভিষেকের কন্যা সাইনা (Saina)-র পড়ার খরচ চালাতে সমস্যা হচ্ছে। সেই সময় সোশ্যাল মিডিয়ায় একটি বিবৃতি দিয়ে এই ধরনের গুজব না রটানোর অনুরোধ করেছিলেন সংযুক্তা। অভিষেকের শ্রাদ্ধানুষ্ঠানের দিন তিনি বলেন, এই মুহূর্তে তিনি যথেষ্ট বিরক্ত বোধ করছেন। সোশ্যাল মিডিয়া তিনি ভবিষ্যতে ব্যবহার করতে পারবেন কিনা তা জানেন না তিনি। সংযুক্তার ঘনিষ্ঠজনরা তাঁকে এসে বলেছেন, টলিউডের এক নামী অভিনেতা নাকি তাঁকে দশ লক্ষ টাকা দিয়ে সাহায্য করেছেন। এরপরেই ক্ষোভে ফেটে পড়ে সংযুক্তা জানান, ওই অভিনেতার সঙ্গে কোনোদিন কমফর্টেবল ছিলেন না অভিষেক। বরং তাঁর জন্য নষ্ট হয়ে গিয়েছে অভিষেকের কেরিয়ার।
সংযুক্তা জানিয়েছেন, আরও একটি গুজব রটেছে, এক নামী অভিনেত্রী নাকি অভিষেকের পরিবারকে পাঁচ লক্ষ টাকা আর্থিক সাহায্য করেছেন। ওই অভিনেত্রীও একই ভাবে অভিষেকের কেরিয়ার ধ্বংসের জন্য দায়ী। সংযুক্তা তাঁদের নাম না নিলেও অভিষেক বরাবর সাক্ষাৎকারে ওই অভিনেতা-অভিনেত্রীর নাম নিয়েছেন। অভিষেকের কেরিয়ার যখন সফলতার শীর্ষে, তখন ওই অভিনেতা-অভিনেত্রীর জন্য তাঁকে একসঙ্গে বাইরেই ফিল্ম থেকে বাদ দেওয়া হয়। মানসিক অবসাদে ভুগতে শুরু করেছিলেন অভিষেক। অধিকাংশ সময় পুজো করেই কাটাতেন। যে অভিনেতা ও অভিনেত্রীর নামে টাকা পাঠানোর গুজব রটেছে, তাঁরা অভিষেকের মৃত্যুতে শোকবার্তাও পাঠাননি বলে জানিয়েছেন সংযুক্তা।
সংযুক্তা শুনেছেন, একজন ক্রিকেটার নাকি সাইনার পড়াশোনার খরচ বহন করতে চান। কিন্তু সংযুক্তা টাকা চেয়েছেন, এই গুজব ছড়িয়ে পড়ার পর আর স্থির থাকতে পারেননি তিনি। অভিষেকের ফেসবুক বরাবর সংযুক্তাই ম্যানেজ করতেন। ফলে তিনি শান্তভাবেই উত্তর দিয়েছেন। সংযুক্তা একটি ইংল্যান্ড বেসড সংস্থার কর্মী। অভিষেক যদি কাজ না করতেন, তাহলেও সংযুক্তা একাই সংসার চালানোর ক্ষমতা রাখতেন। কিন্তু অভিষেক বসে থাকার মানুষ ছিলেন না। স্বামী হিসাবে কাজ করে পরিবারের খরচ বহন করতেন তিনি।
অভিষেক বরাবর আদর্শবান ছিলেন। তিনি কোনোদিন কারো কাছে হাত পাতেননি। তাঁর অর্ধাঙ্গিনী সংযুক্তা তাঁর আদর্শকে উপেক্ষা করতে চান না। সংযুক্তা জানিয়েছেন, যাত্রা করে অভিষেক উপার্জিত অর্থের অধিকাংশটাই ডোনেট করত। অভিষেক লোককে খাওয়াতে ভালোবাসেন। তাই পার্টি দিতেন। এমনকি ইউনিটের লোকজনদের জামাকাপড় কিনে দিতেন।
অভিষেক চলে গেছেন। কিন্তু সংযুক্তার আদর্শে থেকে গিয়েছেন তিনি। অভিষেকের হাসিমুখ মনে রেখে এগিয়ে যাচ্ছেন সংযুক্তা।