বিনোদন

বিশেষ: করোনাকালে দিদা-নাতনি মিলে শুরু করেন ব্যবসা,আজ উপার্জন করছেন লক্ষ লক্ষ টাকা

দাদি শীলা বজাজের বয়স ৭৮ বছর। নাতনি যুক্তি বজাজ ২৬ বছর বয়সী। যুক্তির মা মারা গেছেন কয়েক বছর আগে। বাবা মারা গেছেন খুব ছোটবেলায়। দাদির সঙ্গেই থাকেন তিনি। ছোটবেলা থেকেই যত গল্প, যত আবদার সবকিছুই দাদির কাছে। ২০২০ সালে যখন করোনার কারণে লকডাউনে ঘরবন্দি মানুষ। তখন তারা শুরু করলেন ব্যবসা।

করোনাকালে অনলাইন হয়ে ওঠে শপিংয়ের একমাত্র উপায়। নয়া দিল্লির বাসিন্দা এই দাদি-নাতনিও অনলাইনে শুরু করেন তাদের ব্যবসা। আজ তাদের সফলতার কাহিনি অন্যদের অনুপ্রাণিত করছে। দাদি শীলা বজাজের বয়স ৭৮। এই বয়সে যেখানে অন্যরা অবসর কাটান, সেই বয়সেই তিনি শুরু করেন ব্যবসা।

বয়স তো শুধু একটা সংখ্যামাত্র, তা আবারও প্রমাণ করলেন শীলা। বরাবর উল বুনতে ভালোবাসেন শীলা বজাজ। খুব ভালো সোয়েটার বুনতে পারতেন। শুধু সোয়াটার আর মাফলার নয়, তিনি ঘর সাজানোর বিভিন্ন রকম জিনিস তৈরি করতেন উল দিয়ে। প্রতিবেশীদেরও কোনো পারিশ্রমিক ছাড়াই উলের তৈরি বিভিন্ন কিছু বানিয়ে দিতেন।

তবে শীলার এই গুণের কথা জানতেন শুধু তার পরিচিত মানুষরাই। ২০২০ সালে যখন কোভিড অতিমারীর কবলে পড়ে পৃথিবী। সেই সময়েই যুক্তি ভেবেছিলেন, তার দাদির এত সুন্দর হাতের কাজ সবার দেখা উচিত। যেমন ভাবা তেমন কাজ। একটি ইনস্টাগ্রাম অ্যাকাউন্ট খুলে ফেলেন যুক্তি। সেখানে শীলার তৈরি করা পণ্যের ছবি শেয়ার করেন। সোশ্যাল মিডিয়ায় এই ছবি দিতেই নিমেষে জনপ্রিয় হয়ে ওঠে শীলার তৈরি পণ্যগুলো।

শুরুতে ব্যবসারের উদ্দেশ্য ছিল না যুক্তির। এমনিতেই বন্ধুদের সঙ্গে শেয়ার করার জন্য এসব ছবি পোস্ট করতেন। তবে শীলার বোনা জিনিসগুলো দেখে অনেকেই এই ধরনের জিনিস কিনতে আগ্রহী হন। তখনই ব্যবসা করার কথা মাথায় আসে যুক্তির।

চাহিদা অনুযায়ী সোয়েটার, পুতুল বানিয়ে বিক্রি করা শুরু করেন দু’জনে। কিছুদিনের মধ্যেই বেশ জনপ্রিয় হয়ে ওঠে তাদের ব্যবসা। প্রথমেই পেয়েছিলেন ৬টি অর্ডার। পরের মাসেই তা বেড়ে দাঁড়ায় ২০-২৫টিতে।

এখন তাদের সঙ্গে আরও ছয়-সাতজন কাজ করেন। শুধু সোয়েটার বা মোজা নয়, উল দিয়ে বাচ্চাদের খেলনা, ব্যাগ, কুশন কভার, ঘর সাজানোর জিনিস-সবই পাওয়া যায় তাদের এই দাদি-নাতনির পেজে। ক্যাচ ক্রাফ্ট হ্যান্ডেড নামে তাদের পেজ আছে ইনস্টাগ্রামে। সেখানে উলের তৈরি কানের দুল, ব্যাগ, খেলনা, ওয়ালমেট ১০০ টাকা থেকে শুরু করে ২ হাজার টাকার মধ্যে পাওয়া যায়।

জীবনের শেষ প্রান্তে এসে এই ব্যবসা খুব উপভোগ করছেন শীলা। সময় ব্যস্ততার মধ্য দিয়েই কাটছে। শীলা মনে করেন, কেউ চাইলে যে কোনো সময় যে কোনো কাজ করতে পারেন। কাজের জন্য বয়স কোনো বাধা নয়। শুধু দরকার আশেপাশের মানুষের সহযোগিতা ও ভালোবাসা।

সূত্র: দ্য বেটার ইন্ডিয়া

Back to top button